শিক্ষাদানের কৌশলে আপ্লুত পড়ুয়ারা, ‘শিক্ষারত্ন’ পাচ্ছেন বাঁকুড়ার রক্তিম স্যার
এই সময় | ৩১ আগস্ট ২০২৪
ছাত্ররা অপেক্ষায় থাকে কখন স্যারের ক্লাস হবে। যে কোনও অধ্যায় সহজেই বুঝিয়ে দেন সেই শিক্ষক। তাঁর শিক্ষাদান পদ্ধতি মন জয় করে নিয়েছে সকল পড়ুয়ার। বাঁকুড়া জেলা স্কুলের পড়ুয়াদের সেই ‘প্রিয়’ শিক্ষক এবার পেতে চলেছেন ‘শিক্ষারত্ন’ পুরস্কার। স্কুলের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক রক্তিম মুখোপাধ্যায়। এই খবরে বেজায় খুশি পড়ুয়ারা।রাজ্য সরকারের তরফে চলতি বছরে 'শিক্ষারত্ন' সম্মানে সম্মানিত হতে চলেছেন ১৮৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত জেলার অন্যতম প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাঁকুড়া জেলা স্কুলের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক রক্তিম মুখোপাধ্যায়। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর 'জাতীয় শিক্ষক দিবস'-এর দিন কলকাতায় এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর হাতে এই সম্মান তুলে দেবেন।
শিক্ষক রক্তিম মুখোপাধ্যায়ের আদিবাড়ি বর্ধমানের গুসকরায় হলেও ঝাড়খণ্ডের মাইথনে জন্ম তাঁর। বাবা ডিভিসি-র পাঞ্চেতের একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করতেন। ছোটো থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন রক্তিম মুখোপাধ্যায়। মাইথনের ডি নোবিলি স্কুল থেকে পড়াশুনার পাঠ শেষ করে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে ভর্তি হন। পরে বিশ্বভারতী বিশ্বভারতী বিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। ২০০৪ সালের মার্চ মাসে বাঁকুড়া জেলা স্কুলের শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগ দেন। শিক্ষকতার শুরু করার পর থেকেই 'ছাত্র দরদী' হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা তৈরি হয় রক্তিম স্যারের।
তাঁদের স্কুলের শিক্ষক রক্তিম স্যারের 'শিক্ষারত্ন' প্রাপ্তির খবরে খুশি পড়ুয়ারাও। ছাত্র সর্বদীপ মিত্রের কথায়, 'খুব সহজে উনি আমাদের যে কোনও অধ্যায় বুঝিয়ে দেন। স্যার পড়ানোর পাশাপাশি আমাদের সঙ্গে খুব মজাও করেন। তাঁর এই পুরস্কার প্রাপ্তির খবর পেয়ে আমরাও খুব গর্বিত।’ জেলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণধন ঘোষ বলেন, ‘এটা অত্যন্ত আনন্দের খবর। রক্তিমবাবুর এই শিক্ষারত্ন প্রাপ্তি আমাদের স্কুলকেও গর্বিত করেছে।’ শিক্ষকতার পাশাপাশি ছাত্রদের নিয়ে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও শিক্ষক রক্তিম মুখোপাধ্যায় প্রতিনিয়ত যুক্ত থাকেন বলে তিনি জানান।
শিক্ষক রক্তিম মুখোপাধ্যায় বলেন, 'আমি সত্যিই আপ্লুত। যাদের সঙ্গে আমার সব থেকে বেশি যোগাযোগ সেই ছাত্রসমাজকে আগে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই।’ মানুষ গড়ার কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত করার সুযোগ পেয়ে বাবা, মা, পরিবার সহ সহকর্মীদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, 'জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই কাজেই যুক্ত থাকতে চাই'। বর্তমান ছাত্র সমাজ জাতির ভবিষ্যৎ, তাঁদের দেখানো পথেই সামাজিক অবক্ষয়কে দূরে সরিয়ে প্রত্যেকেই এগিয়ে যাক সেটাই চাইছেন তিনি।