টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: শুক্রবার মাঝরাতে বাঁকুড়ার শালতোড়ার বাইকে থাকা বিস্ফোরক ফেটে মৃত্যু হয় এক যুবকের। বিজেপির অভিযোগ, বিভিন্ন বেআইনি খাদানের জন্য অবৈধ ডিনামাইট নিয়ে যেতে গিয়ে এই বিস্ফোরণ। ঘটনায় শনিবার স্থানীয় বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির নেতৃত্বে NIA তদন্তের দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখায় গেরুয়া শিবির। তাঁদের দাবি, এলাকায় বিভিন্ন বেআইনি খাদানের ব্যবসা রমরমিয়ে চলে। সেই কাজে ডিনামাইট ব্যবহার করা হয়। তা বন্ধ করতে হবে। এছাড়া গেরুয়া শিবিরের হুঁশিয়ারি, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ ঘটনার কিনার করতে না পারলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে। ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
ঘটনার পর থেকে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। বাইকে কী ধরনের বিস্ফোরক ছিল? তা কী উদ্দেশ্যে, কোথায় বা কার কাছে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল? দুধ ব্যবসায়ীর কাছে তা এল কী করে? প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার পি বৈভব তেওয়ারী বলেন, “শুক্রবার একটি বাইকে বিস্ফোরণ ঘটে। খবর পেয়ে আমাদের দল সেখানে যায়। আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
বিস্ফোরণ কাণ্ডে এদিন শালতোড়ায় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি বলেন, ” শুক্রবার শালতোড়ার বুকে ভয়াবহ বিস্ফোরণে একজনের মৃত্যু হয়েছে। সেই বিস্ফোরক কোথা থেকে এল? কেউ ওই ব্যক্তির বাইকে রেখে গিয়েছিল কি না? কী জন্য সেই বিস্ফোরক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তা আমরা কেউ জানি না। বিস্ফোরণের যে তীব্রতা ছিল তাতে অনুমান অবৈধ কোনও কাজে তা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এছাড়া এখানে অনেক পাথর খাদান রয়েছে। কতগুলোর সরকারি অনুমতি আছে জানা নেই। তার উত্তর চাই।”
স্থানীয় বিজেপি নেতা সুনীলরুদ্র মণ্ডল বলেন, ” এখানে বিভিন্ন জায়গার পাথর খাদান রয়েছে। সবগুলোই অবৈধ। সেই পাথর খাদানগুলোর জন্য বিস্ফোরক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। নাকি কোনও নাশকতার ছক ছিল? তা পুলিশের তদন্ত করে দেখা উচিত।” এছাড়াও তিনি এনআইএ তদন্তের দাবি তুলেছেন। পুলিশকে ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে বিজেপি নেতার হুঁশিয়ারি, “এই বিস্ফোরণের সঠিক তদন্ত করে এর পিছনে কারা রয়েছে তা খুঁজে বার করতে হবে। তা না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।” এছাড়া তার আরও অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য তৃণমূল অবৈধ কারবার চালাচ্ছে। এদিকে মৃত জয়দেবের স্ত্রী বলেন, “আমার স্বামীর দুধের ব্যবসা ছিল।সঙ্গে সবজি চাষ করত। সেই দিয়েই সংসার চলে।” ডিনামাইট বা বিস্ফোরকের বিষয়ে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই। প্রয়োজনে পুলিশ আমাদের বাড়ি খুঁজে দেখতে পারে।”