• অশক্ত শরীরেও নিয়মিত পড়াশোনা, গ্রন্থাগার দিবসে পেলেন সেরা পাঠকের সম্মান
    বর্তমান | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: বয়স ৮৫। অশক্ত শরীর। কিন্তু চশমা চোখে এখনও দিব্যি পড়াশোনা করেন বেরুবাড়ির লালবাজারপাড়ার বাসিন্দা যতীন্দ্রনাথ রায়। নিয়ম করে তিনি লাইব্রেরিতে যান। নানা ধরনের বইপত্র উল্টেপাল্টে দেখেন। কখনও বইয়ে মুখ গুঁজে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেন লাইব্রেরিতেই। কখনও আবার লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে আসেন বাড়িতে। গোগ্রাসে শেষ করে তা ফেরত দিয়ে আবারও নতুন বইয়ের জন্য আবেদন জানান। এহেন একাগ্রতার জন্য শনিবার, সাধারণ গ্রন্থগার দিবসে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের তরফে সেরা পাঠকের সম্মান দেওয়া হল যতীন্দ্রনাথকে। সম্মান পেয়ে আপ্লুত ওই বৃদ্ধ। বললেন, আমার দানের জমিতেই প্রগতিশীল পল্লি উন্নয়ন সঙ্ঘ গ্রন্থাগার তৈরি হয়েছে। পরিবারের সবাই নিজের নিজের কাজে ব্যস্ত। আমার সময় কাটে না। তাই লাইব্রেরিতে গিয়ে বসে থাকতে শুরু করি। তারপর বইপত্র নাড়াচাড়া করতে করতেই পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। বইকে ভালোবেসে ফেলি। কিন্তু এজন্য যে জেলায় সেরা পাঠকের সম্মান পাব, কোনওদিন ভাবিনি।

    শনিবার জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রয়াস হলে গ্রন্থাগার দিবসের অনুষ্ঠানে যতীন্দ্রনাথের হাতে সম্মান তুলে দেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) তথা লোকাল লাইব্রেরি অথরিটির ওয়ার্কিং চেয়ারম্যান পুষ্পক রায়। তাঁর সঙ্গেই এদিন সেরা পাঠকের সম্মান পেয়েছেন জলপাইগুড়ি শহরের মার্চেন্ট রোডের বাসিন্দা গৃহবধূ সোনালী দাশগুপ্ত। সংসারের কাজ সামলে গত দু’বছর ধরে জেলা গ্রন্থগারে নিয়মিত পড়াশোনা করতে আসেন তিনি। সেরা পাঠকের সম্মান পেয়ে বললেন, প্রচুর বই পড়েছি। এই সম্মান আমাকে গর্বিত করল। অন্যরাও যাতে বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করেন, সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

    জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক ইমরান শেখ বলেন, আমরা গোটা জলপাইগুড়ি জেলা থেকে ৭৩ জনকে সেরা পাঠক হিসেবে বাছাই করেছি। এদিন চার জনকে মঞ্চ থেকে সম্মানিত করা হয়েছে। বাকিদের লাইব্রেরি থেকে সম্মান জানানো হবে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বলেন, জলপাইগুড়ি জেলায় অনেক রুরাল লাইব্রেরিতে পরিকাঠামোর সমস্যা রয়েছে। সেসবের কাজ চলছে। শীঘ্রই ৯৩ জন লাইব্রেরিয়ান যোগ দেবেন। সাধারণ গ্রন্থগার দিবসের অনুষ্ঠানে অনেকেই উপস্থিত হয়েছি আমরা। কিন্তু ক’জন সত্যিই বই পড়ি? সোশ্যাল মিডিয়ায় কে, কতক্ষণ সক্রিয় থাকেন, তার অলিখিত প্রতিযোগিতা চলে এখন। বই হল বাছাই করা বন্ধু। বই জীবন গড়ে দিতে পারে।  যতীন্দ্রনাথ রায়।
  • Link to this news (বর্তমান)