• ভোগান্তি চলছে! এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ার থেকে প্রত্যাখানের অভিযোগ
    বর্তমান | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: একরোখা আন্দোলনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভোগান্তি যেন বেড়েই চলেছে। এসএসকেএমের মেইন বিল্ডিংয়ের অবস্থান মঞ্চের থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে একের পর এক রোগীকে ‘রেফার’ করা হল। তাই দেখে জরুরি বিভাগের ভিতরেই কেউ বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন, আবার কেউ অসহায় হয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে রইলেন। এদিন ট্রমা কেয়ার থেকেও ফেরানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন হাওড়ার এক রোগীর পরিজন।

    সকাল থেকেই আচমকা পায়ে সংক্রমণ শুরু হয় তরুণ কালীপদ সর্দারের। এক বন্ধু আর ভাই মিলে ডোমজুড় থেকে রাজ্যের পয়লা নম্বর হাসপাতালে চিকিত্সার জন্য নিয়ে এসেছিলেন। ভাই শ্রীকান্ত রায় বলছিলেন, ‘প্রথমে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে এলাম। এখান থেকে বলল, ট্রমা কেয়ারে নিয়ে যেতে। সেখানে তো ঢুকতেই দিল না। জিজ্ঞেস করল, এটা কি অ্যাকসিডেন্ট কেস? না বলতেই বলল, শুধু অ্যাকসিডেন্ট কেস দেখা হচ্ছে।’ শ্রীকান্তবাবু বলছিলেন, ‘বাড়ি থেকেই বলেছিল, ওখানে ডাক্তার নেই। কেন নিয়ে যাচ্ছিস! এখন বেসরকারি কোথাও যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।’ শ্রীকান্তবাবুরা যখন অ্যাপ ক্যাব বুক করছেন, সেই সময় জরুরি বিভাগের সামনে বসে বোনের চিকিত্সা না পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন কাঁকিনাড়ার জয়ন্তী বোস। বলছিলেন, ‘২ মাস আগে এখানেই অস্ত্রোপচার হয়েছিল। দু’দিন আগে এখানে এলে কল্যাণীতে রেফার করল। চারদিন ওখানে থাকার পর আবার এসএসকেএমে রেফার করল। এখন বলছে, ইনজেকশন দিয়েছি। নিয়ে যান, ব্যথা হলে আবার আনবেন। আমরা ৪ হাজার টাকা খরচ করে অ্যাম্বুলেন্সে এলাম। আবার খরচ করতে হবে!’ জয়ন্তীদেবীর বোনের স্বামী সব্জি বিক্রি করেন। ‘বেড নেই’ বলে দেওয়ার পরেও পরিবারের লোকেরা যদি কোনওভাবে ভর্তি করা যায়, সেই চেষ্টা করছিলেন। এদিকে, পিংলা থেকে ক্যান্সার আক্রান্ত বৃদ্ধ রাধানাথ নাইয়াকে এসএসকেএমে নিয়ে এসে আতান্তরে পড়েছেন। ছেলে চিন্ময় নায়েক বলছিলেন, ‘মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ৪ দিন থাকার পর কলকাতায় নিয়ে যেতে বলল। এখানে বলছে বেড নেই। অন্য হাসপাতালে যেতে। এভাবে তো আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে। একজনের বিচার চাইতে গিয়ে তো ২০০ জন মারা যাবে। আন্দোলন চলুক। কিন্তু আমাদের দিকটাও তো দেখতে হবে। এখন ভাবছি এনআরএসে নিয়ে যাব।’

    অবশ্য এদিন আউটডোর খোলা ছিল। ডাক্তার কম থাকলেও যাঁরা এসেছেন, তাঁদের পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। অনেকেই জানিয়েছেন, অনেকদূর থেকে এলেও বহির্বিভাগে ডাক্তারকে দেখাতে পেরেছেন। কয়েকজন ইমার্জেন্সিতেও পরিষেবা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)