• গড়িয়াহাটে ধর্ষণে অভিযুক্ত চিকিৎসক 
    বর্তমান | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ঠিক তখনই শহরের অপর প্রান্তে নিজের চেম্বারের রিসেপশনিস্টকে বাড়িতে রেখে সাড়ে চার বছর ধরে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন আটান্ন বছরের এক চিকিৎসক। ধৃতের নাম ডাঃ রাজদীপ মুখোপাধ্যায়। শুক্রবার রাতেই কলকাতার ৮/৫২ ফার্ন রোডের বাসিন্দা ওই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করে গড়িয়াহাট থানার পুলিস। নির্যাতিতা মহিলা রিসেপশনিস্টের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে অবশ্য জামিন পান অভিযুক্ত চিকিৎসক।

    কলকাতা পুলিসের এক সূত্র জানিয়েছে, স্ত্রীর অবর্তমানে ছেলে এবং মেয়েকে নিয়ে থাকেন ডাঃ রাজদীপ। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ফার্ন রোডের বাড়িতে ঠাঁই দেন নিজের চেম্বারের রিসেপশনিস্টকে। এরপর থেকেই তাঁরা লিভ-ইন করছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছে পুলিস। তবে নির্যাতিতা মহিলার দাবি, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত সাড়ে চার বছর ধরে তাঁকে লাগাতার ধর্ষণ করে গিয়েছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক।

    যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত হয় চলতি বছরের ২৪ জুন। পুলিস জানতে পেরেছে, ওই দিন বাড়ি থেকে আড়াই লক্ষ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে মহিলাকে বের করে দেন ডাঃ রাজদীপ এবং তাঁর ছেলে ঋষভ মুখোপাধ্যায়। সেই ঘটনার সূত্র ধরেই দিন কয়েক আগে স্থানীয় গড়িয়াহাট থানায় চিকিৎসকের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা রিসেপশনিস্ট। তার ভিত্তিতে অভিযুক্ত ডাঃ রাজদীপ মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পূর্বতন ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে ধর্ষণ (৩৭৬) এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের মাধ্যমে প্রতারণা (৪১৭) মতো একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্তে নামে পুলিস। এবং শেষপর্যন্ত শুক্রবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

    ধৃত চিকিৎসক রাজদীপ মুখোপাধ্যায়কে শনিবার দুপুরে হাজির করা হয় আলিপুর আদালতে, মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে। বিচারক অবশ্য এক লাখ টাকার দু’টি বন্ডে অভিযুক্ত ডাক্তারের জামিনের আর্জি মঞ্জুর করেছেন। সেইসঙ্গে নির্যাতিতা মহিলার গোপন জবানবন্দির আবেদনও আদালত মঞ্জুর করেছে বলে খবর।

    এমন একটা সময় এই ঘটনা ঘটেছে, যখন আর জি কর কাণ্ডে দোষীর শাস্তি এবং নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতিতে নেমেছেন চিকিৎসক সমাজ। সেই পর্বেই শহরের অভিজাত এলাকায় একজন প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ায় রীতিমতো অস্বস্তিতে বিক্ষোভকারী ডাক্তাররা। ঘটনা প্রসঙ্গে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস’ ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তথা উপদেষ্টা ডাঃ কৌশিক লাহিড়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘চিকিৎসক বা যে পেশার মানুষ হন না কেন, আইন আইনের পথে চলবে। দোষ করলে তাঁকে শাস্তি পেতেই হবে।’
  • Link to this news (বর্তমান)