• ডাকাতদের গুলিতে মৃত্যু, এক বছরের মধ্যেই দোষী সাব্যস্ত ৫
    বর্তমান | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: ২০২৩ সালের ২৪ মে ভরসন্ধ্যায় ডাকাতদের ছোড়া গুলিতে নিহত হন ২৬ বছরের যুবক নীলাদ্রি সিংহ (২৬)। সেদিন বারাকপুর ১৪ নম্বর রেলগেটের কাছে একটি সোনার দোকানে ডাকাতি করতে এসে বাধা পেয়ে ডাকাতরা গুলি চালাতে শুরু করেছিল। সেই গুলিতে নিহত হন স্বর্ণ ব্যবসায়ী নীলরতন সিংয়ের ছেলে নীলাদ্রি। ওই ব্যবসায়ীও গুলিতে জখম হয়েছিলেন। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিস পাঁচজনকে গ্রেপ্তার  করে। শনিবার, ঘটনার ১৫ মাসের মধ্যে ওই পাঁচ অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করলেন বারাকপুরের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অয়নকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের কাছে আবেদনের ভিত্তিতে বিভাস চট্টোপাধ্যায়কে এই মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছিল। নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ, ডিজিটাল এভিডেন্স ও প্রামাণ্য  ভিডিও ফুটেজ  পেশ করা হয় আদালতে। শনিবার রায় শুনিয়েছেন বিচারক। দোষীদের সাজা ঘোষণা হবে আগামী সোমবার। যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ডের মতো সর্বোচ্চ সাজাই হবে বলে আশাবাদী নিহতের পরিবার ও সরকার পক্ষ। 

    আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচজন দোষীর নাম উত্তমকুমার উপাধ্যায় ওরফে গোলু, সফি খান ওরফে সোনু, জামসেদ আনসারি, রাজবীর সিং এবং আসিফ খান ওরফে আশিসকুমার রায়। প্রত্যেককেই এদিন আদালতে হাজির করানো হয়। এজলাসে হাজির ছিলেন নিহতের বাবা নীলরতন সিংহ সহ আত্মীয়রা। বিচারক ঘটনার তদন্তকারী অফিসার ইন্দ্রজিৎ দাসের ভূমিকার প্রশংসা করেন। এর পর ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৯৬, ৩৯৭, ৩২৬, ৩০৭, ১২০বি, ২৫/২৭/৩৫ অস্ত্র আইনে পাঁচজনকেই দোষী সাব্যস্ত করেন। আইনজীবী বিভাসবাবু বলেন, ‘ভারতবর্ষে এটাই প্রথম কোনও মামলা, যেখানে ব্লু-টুথ ডেটা (ইলেকট্রনিক এভিডেন্স) একটি খুনের কিনারা করতে সাহায্য করল।’ 

    উল্লেখ্য, ঘটনার দিন ওই সোনার দোকানের মধ্যে দুষ্কৃতীদের ফেলে যাওয়া একটি ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয়েছিল একটি ব্লু-টুথ ডিভাইস। সেটির সূত্র ধরেই পুলিস অপরাধীদের একে একে গ্রেপ্তার করে। তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম হাতিয়ার ছিল আইপিডিআর (ইন্টারন্যাল প্রোটোকল ডেটা রেকর্ডস) সিস্টেম। এই সিস্টেমের সাহায্যেই অপরাধীদের লোকেশন জানা যায়।’  বারাকপুরের পুলিস কমিশনার অলক রাজোরিয়া বলেন, ‘ঘটনার পর আমি নিহতের বাড়ি গিয়ে তাঁর বাবাকে কথা দিয়ে এসেছিলাম, দ্রুত যাতে সুবিচার মেলে, তার ব্যবস্থা করব। সেই চেষ্টা করে গিয়েছি আমরা। দোষী সাব্যস্ত আসিফ খানের বিরুদ্ধে বিহারের এক ইতিহাস গবেষকের বাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়ে বাধা পেয়ে তাঁকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ রয়েছে। সমস্ত তথ্যপ্রমাণ আমরা জোগাড় করে আদালতে পেশ করি।’ নিহত যুবকের বাবা নীলরতন সিং বলেন, ‘আমার তো সবই চলে গিয়েছে। যারা আমার ছেলেকে কেড়ে নিল, তাদের যেন ফাঁসি হয়।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)