ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ডের ব্যবস্থা করতে বিধানসভায় বিল আনতে চলেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। আরজি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বিলে বিজেপি বিধায়কদের পূর্ণ সমর্থন থাকবে বলে শনিবার জানিয়ে দিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।যদিও বিজেপির পরিষদীয় দলের তরফে এখনও এ নিয়ে অবস্থান খোলসা করা হয়নি। বিজেপির একটি সূত্রের খবর, ওই বিল নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘাতে যাওয়ারই পরিকল্পনা ছিল বিজেপি বিধায়কদের। কিন্তু শনিবার দলের রাজ্য সভাপতি জানিয়ে দিলেন, ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড সংক্রান্ত তৃণমূলের বিল নিয়ে বিজেপি বিধায়কদের অবস্থান কী হতে চলেছে।
ধর্মতলার ধর্নামঞ্চে যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুকান্ত বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাটক ফাঁস করার জন্যে আমাদের বিধায়করা এই বিলকে দু’হাত তুলে সমর্থন জানাবেন।’ তাঁর সংযোজন, ‘অতীতে অনেক রাজ্য সরকারই এ রকম চেষ্টা করেছে। রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে সে-সব বিল পড়ে আছে। কোনও রাজ্য সরকারই এ রকম আইন তৈরি করতে পারে না। মনে রাখতে হবে, মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ক্ষমতা রাজ্য সরকারের নেই। এটা কোর্টের বিষয়। তা ছাড়া একই বিষয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের আইন থাকলে কেন্দ্রের আইনই কার্যকরী হবে। নতুন চালু ন্যায় সংহিতাতেও ধর্ষকদের কঠোর শাস্তির কথাই বলা আছে। মুখ্যমন্ত্রী মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন।’
কিন্তু সুকান্ত এ বিষয়ে তৃণমূলকে কোনও রকম রাজনীতি করার সুযোগ দিতে চান না বলে বিজেপির একাংশের দাবি। দলের এক সাংগঠনিক নেতার কথায়, ‘ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্যে যে বিল তৃণমূল আনতে চলেছে, তা আইওয়াশ ছাড়া কিছু নয়। কারণ, এটা রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্তই নয়। কিন্তু আমাদের বিধায়করা বিল সমর্থন না করলে তৃণমূল রাজনীতি করার সুযোগ পেয়ে যাবে। সেটা আমরা হতে দেবো না।’
তবে সুকান্তর ঘোষণা নিয়ে বিজেপির অন্দরে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনও ইস্যুতে বিধানসভার ভিতরে বিজেপি বিধায়কদের অবস্থান কী হবে, সেটা ঠিক করার কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। সুকান্ত যে ভাবে শুভেন্দুর আগেই দলীয় বিধায়কদের অবস্থান বাতলে দিলেন, তা গেরুয়া শিবিরে নতুন বিতর্ক তৈরি করবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশও।
যদিও বিজেপির এক বিধায়কের কথায়, ‘সুকান্ত মজুমদার দলের রাজ্য সভাপতি। তাঁর এক্তিয়ার আছে বিধায়কদের দলীয় অবস্থান জানিয়ে দেওয়ার।’