• 'এ সমাজ বড় বিষাক্ত…', আরজি কর কাণ্ডের আবহে ফেসবুকে পোস্টে কাকে তোপ দেবাংশুর?
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • হরিয়ানায় বাংলার যুবককে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গরুর মাংস খাওয়ার 'অপরাধে' নাকি সেই যুবককে খুন করা হয়েছে। এই আবহে ফেসবুক পোস্ট করে 'সমাজের' প্রতি নিজের 'অভিমান' ও 'হতাশা' ব্যক্ত করলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। গোটা কলকাতা তথা বাংলা যখন আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে উত্তাল, তখনই হরিয়ানায় বাংলার যুবক সাবির খুন হয়েছেন। তবে তা নিয়ে বাংলার কেউ সেভাবে প্রতিবাদ করছেন না বলেই অভিযোগ দেবাংশুর। আর তাই তিনি ফেসবুক পোস্টে লেখেন, 'এ সমাজ বড় বিষাক্ত! সাবির মল্লিকের জন্য কেউ গলা ফাটাবে না।'

    জানা গিয়েছে, মৃত যুবক দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর বাসিন্দা ছিলেন। গরুর মাংস খায়, এই সন্দেহেই নাকি হরিয়ানাতে সাবিরকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে মারে গোরক্ষা কমিটির সদস্যরা। পরে একটি খালের ধার থেকে উদ্ধার হয় সাবিরের দেহ। এদিকে পরিবারের অভিযোগ, হরিয়ানা পুলিশ সাবিরের খুনের বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে না। পরিবারের সদস্যদের কথায়, এলাকায় কাজ না পেয়ে প্রায় তিন বছর আগে স্থানীয় কয়েক জন যুবককে নিয়ে হরিয়ানায় যান সাবির। নিহত যুবকের শ্যালকও তার সঙ্গে গিয়েছিল সেখানে কাজ করতে। সেই শ্য়ালকের সঙ্গেই বাড্ডা থানা এলাকায় থাকতেন বছর তেইশের সাবির। সেখানে কাগজ কুড়নোর কাজ করতেন তিনি। পরিবারের অভিযোগ, হরিয়ানার গো-রক্ষা কমিটির সদস্য়রা তাঁকে গরুর মাংস খাওয়ার অভিযোগে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে।

    মৃতের পরিবারের দাবি, গোরক্ষক কমিটির লোকেরা সাবিরকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পরে একটি নিকাশি খালের পাশ থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, এরপর সাবিরের শ্য়ালক সুজাউদ্দিনকে থানায় তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে অবশ্য় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। গত ৩০ অগস্ট দুপুরে বাসন্তীর বল্লারটপ গ্রামে পৌঁছয় সাবিরের মৃতদেহ। এদিকে এই বিষয়ে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ঘটনাটিকে ‘গণপিটুনি’ আখ্যা দেওয়া ঠিক নয়। তাঁর কথায়, 'গো-রক্ষার জন্য বিধানসভায় কঠোর আইন করা হয়েছে এবং তাতে কোনো আপস নেই। গ্রামবাসীদের গরুর প্রতি এতটাই শ্রদ্ধা যে তাঁরা যদি এমন কিছু জানতেও পারেন, তাহলে তাঁদের কে আটকাতে পারে? আমি বলতে চাই, এই ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে এবং এসব ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক।'

    হরিয়ানা পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া এফআইআর অনুসারে, ২৭ অগস্ট সকালে বেশ কয়েকজন যুবক এসে সাবিরদের বস্তিতে চোটপাট শুরু করে। এরপর সাবিরকে স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যায় তারা। অভিযোগ, সাবির ছাড়াও অসমের বাসিন্দা আসিরুদ্দিন নামে আরেক পরিযায়ী শ্রমিককেও বাসস্ট্যান্ডে ডেকে নিয়ে যায় সেই যুবকের দল। সেখানে দুজনকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পথচারীরা বাধা দিলে তারা দুজনকে তাদের মোটরসাইকেলে করে অন্য কোনও জায়গায় নিয়ে যায়। পরে সাবিরকে একটি খালের কাছে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। আসিরুদ্দিনকে অন্য জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। বর্তমানে অসমের সেই যুবক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)