অরূপ বসাক- বিধান সরকার: আরজি কর হাসপাতালে (R G Kar Incident) তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ১৮ দিন পর প্রকাশ্যে আসে সেমিনার রুমের ভিডিয়ো ও ছবি। ভাইরাল হওয়া এই ভিডিও এবং ছবিতে দেখা গিয়েছে, নির্যাতিতার দেহ উদ্ধারের পরই সেখানে গিজগিজ করছে ভিড়। চাঞ্চল্যকর সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরেই প্রশ্ন ওঠে সেমিনার রুমে সেদিন ওরা কারা? শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে সেই ছবিতে উপস্থিত ব্যক্তিদের পরিচয় সামনে আনলেন ডিসি সেন্ট্রাল (DC Central) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় (Indira Mukhopadhyay)। কিন্তু সেখান থেকেই শুরু হয় নয়া বিতর্ক।
লাল শার্ট পরা এক ব্যক্তিকে ছবিতে মার্ক করে 'ফিঙ্গারপ্রিন্ট এক্সপার্ট' হিসেবে দেখিয়েছিলেন ইন্দিরা। এবার ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের দাবি তিনি নাকি অভীক দে,পিজিটি এসএসকেএম প্রথম বর্ষের ছাত্র। এসএসকেএমের পিজিটি সেদিন ওখানে কী করছেন? কবে থেকে ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞ হলেন অভীক দে? আরজি কর ক্রাইম সিনে তিনি কেন? প্রশ্ন উঠছে অনেক। এরই মাঝে অভীকের নামে উঠল বেশ কিছু অভিযোগ।
আরজি কর কাণ্ডে সমালোচিত অভীক দের সঙ্গে বর্ধমান জেলা ছাত্র পরিষদের সভাপতি স্বরাজ ঘোষের ছবি ভাইরাল। জানা গেছে অভীক দে, রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ছিলেন। এই ব্যাপারে অভীকের কোন বক্তব্য পাওয়া না গেলেও স্বরাজ ঘোষের দাবি, 'তৃণমূল নেতা হওয়াতেই তার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। সেই সূত্রেই বিয়েতে যাওয়া আর সেখানেই এই ফটো তোলা হয়েছে। এছাড়া মন্দিরে গিয়ে একদিন দেখা হয়েছিল, সেখানে ছবি তুলেছিলাম। ছবি তোলা হতেই পারে। সমাজ মাধ্যমে ছড়াতেও পারে। যেহেতু বিচারাধীন বিষয় সেহেতু এই ব্যাপারে বেশি কথা বলব না'।
অভীকদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন বর্ধমান জেলা বিজেপির মুখপাত্র চিকিৎসক সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়, তিনি বলেন, 'কলকাতা থেকে জেলা সর্বত্রই সিণ্ডিকেট চালাচ্ছে এই অভীকদের লোকজন। টাকা তোলা হয়। তোলাবাজি চালায় তারা। তার সঙ্গে আছে বর্ধমানের দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস ও তৃণমূল ছাত্র নেতা স্বরাজ ঘোষ।এই টাকা চলে যায় কলকাতায় ভাইপো ও পিসির কাছে'।
অভীকের ক্ষমতা শুধু এসএসকেএম বা আরজিকরেই আটকে নেই, তার আভাস পাওয়া গেল বেশ কয়েকটি ঘটনায়। পিজিটি অভীক দে আর জি কর ঘটনার পনেরো দিন আগে চুঁচুড়ার এক চিকিৎসককে ফোন করে কদর্য ভাষায় হুমকি দেন বলে অভিযোগ। আই এম এর হুগলি চুঁচুড়া শাখার সভাপতি ডাঃ ইন্দ্রনীল চৌধুরী এই অভিযোগ করেন। তিনি দাবি করেন, 'মেডিকেল সিন্ডিকেট ও লবি সব জেলায় আছে। কোভিড কোটায় এসএসকেএম হাসপাতালে এম ডি-তে ভর্তি হয়। শুধু লবির জোরে একই হাসপাতালে বছরের পর বছর থেকে যান চিকিৎসকরা। একটা গোষ্ঠী গোটা সিস্টেমটা চালাচ্ছে বছরের পর বছর। আর জি করের তরুনী চিকিৎসকের মৃত্যুর পর সেই বিষয় গুলো সামনে আসছে'। পাশাপাশি তিনি জানান যে এমন কয়েকজন চিকিৎসকের নাম রাজ্য আইএমএ-কে মুখ বন্ধ খামে দেবে হুগলি চুঁচুড়া আইএমএ, সিবিআই-কে দেওয়ার জন্য।