• আজ কৌশিকী অমাবস্যা সেজে উঠেছে তারাপীঠ
    বর্তমান | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: আজ সোমবার কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছে তারাপীঠ। এই প্রথম হরিদ্বারের আদলে দ্বারকা নদের পাড়ে হবে আরতি। যা দেখতে মুখিয়ে রয়েছেন পুণ্যার্থীরা। এদিন ভোরে কৌশিকী তিথির শুরুতেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে প্রথম পুজো দেবেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার বিকেল থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে ভক্ত ও সাধুরা আসতে শুরু করেছেন।

    এদিন ভোর ৪টেয় মায়ের স্নান, মঙ্গলারতি ও পাঁচরকম ফল, ছোলা দিয়ে ভোগ নিবেদনের পর ভক্তদের জন্য খুলে দেওয়া হবে গর্ভগৃহ। এবার ভোর ৫টা ৫ মিনিটে পড়বে কৌশিকী অমাবস্যা তিথি। তখন থেকেই দেবী তারাকে কৌশিকী রূপে পুজো শুরু হবে। মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, মধ্যরাত থেকেই পুজো দেওয়ার জন্য ভক্তদের লম্বা লাইন পড়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা ২৯ মিনিট পর্যন্ত এই তিথি থাকবে। দুপুরে পোলাও, খিচুড়ি, সাদা ভাত, পাঁচরকম ভাজা, পাঁচরকম তরকারি, মাছ, বলির পাঁঠার মাংস, মিষ্টি ও পায়েস নিবেদন করা হবে। সন্ধ্যারতির পর লুচি, সুজি, মুড়কি দিয়ে শীতল ভোগ দেওয়া হবে। এরপর নিশিরাতে মাকে সোনার গয়না, বিভিন্ন রকম ফুল দিয়ে রাজ-রাজেশ্বরী বেশে সাজিয়ে তুলে বিশেষ পুজো হবে। সেই সময় মায়ের কাছে পুজো দিতে ভক্তরা হুড়মুড়িয়ে পড়েন। নিশিরাতে ফের পোলাও, খিচুড়ি, সাদা ভাত, পাঁচরকম ভাজা, পাঁচরকম তরকারি, কাতলা, ইলিশ, গলদা চিংড়ি, রুই ও শোল মাছ, বলির পাঁঠার মাংস, মিষ্টি ও পায়েস দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হবে। শয়ন আরতির পর মায়ের গর্ভগৃহ কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ রাখা হবে। 

    বিহারের ভাগলপুর থেকে আসা পুণ্যার্থী সুনীল কুমার, সুরেশ কুমার বলেন, এই তিথিতে পুজো দিলে অশুভ শক্তির বিনাশ হয়। পরিবারে শান্তি ফিরে আসে। তাই প্রতিবছর ভিড় উপেক্ষা করে মায়ের কাছে আসি। ফলও পেয়েছি। কলকাতা থেকে এদিনই স্পেশাল ট্রেন ধরে পরিবার নিয়ে এসেছেন সুপ্রিয় রায়। তিনি বলেন, ভিড়ের জন্য কৌশিকীর সময় আসি না। তবে প্রায়ই মায়ের কাছে আসি। এবার যেহেতু কৌশিকী তিথিতে দ্বারকার পাড়ে আরতি হচ্ছে, তাই সেই দৃশ্য দেখার জন্য এসেছি। সেই সঙ্গে মায়ের কাছে পুজো দেওয়াও হবে। পুণ্যার্থীদের অনেকেই বলছেন, এই আরতির মধ্য দিয়ে তারাপীঠের মতো পর্যটন কেন্দ্রে নতুন পালকের সংযোজন হবে।

    দ্বারকা নদের ২০০ মিটার পাড় বাঁধিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে পার্ক। সেই সঙ্গে আরতির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখান থেকে মন্দির ও শ্মশান দেখা যায়। দিনকয়েক আগে এই পাড়েই আরতির প্রস্তাব দেন জেলাশাসক বিধান রায়। সেই মতো দ্বারকার অপর পাড়ে স্থায়ীভাবে লোহার রেলিং বসিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। যাতে দর্শনার্থীদের ভিড়ের চাপে কেউ দ্বারকা নদে পড়ে না যান।  সন্ধ্যায় দেবীর আরতির সঙ্গেই দ্বারকা নদের পাড়ে ঘিয়ে ডোবানো সলতের পঞ্চপ্রদীপ হাতে তারাপীঠের সেবাইতরা করবেন আরতি। পরপর পাঁচটি পৃথক জায়গায় পাঁচজন সেবাইত এই আরতি করবেন বলে জানিয়েছেন টিআরডিএর ভাইস চেয়ারম্যান সুকুমার মুখোপাধ্যায়। 

    মন্দির কমিটি সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, এই আরতি এবার বড় চমক। বামাখ্যাপার সাধনাস্থল পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠল। শনিবার বিকেলে কৌশিকী তিথি উপলক্ষ্যে পুলিস-প্রশাসনের ব্যবস্থাপনা ঘুরে দেখেন আশিসবাবু।
  • Link to this news (বর্তমান)