• সব অনুষ্ঠানে কাগজের প্লেটের দাপট, অতীত শালপাতা, মনখারাপ পিড়কাটার
    বর্তমান | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পিড়াকাটা: শালপাতা এনে ডাইস মেশিনের সাহায্যে তৈরি করা হতো থালা, বাটি। পুজো আসতেই বিক্রি বেড়ে যেত বহুগুণ। হাসি ফুটত এলাকার ব্যসায়ীদের মুখে। কিন্তু এখন বাজারে কাগজের থালা, বাটির দৌরাত্ম্য বেশ বেড়েছে। আর তাতেই শালপাতার থালা, বাটির ব্যবসা একেবারে লাটে উঠেছে। পুজোর আগে তাই মন খারাপ ব্যবসায়ীদের। ছবিটা শালবনী ব্লকের মালিদা সহ একাধিক গ্রামের। শালপাতার ব্যবসায়ীদের কথায়, বহু পরিবার থালা, বাটি বানিয়ে সংসার চালাত। কিন্তু এখন অনেকেই ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। তাই সংসার চালাতে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া আগের তুলনায় ডাইস মেশিনের দামও অনেকটাই বেড়েছে। এরফলে একবার পুরনো মেশিন খারাপ হলে আর নতুন মেশিন কেনার সাহস পাচ্ছেন না অনেকেই। এদিন কথা হচ্ছিল শালপাতার ব্যবসায়ী অংশুমান বেরার সঙ্গে। তিনি বলেন, আগে বহু মানুষ এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আমাদের তৈরি থালা, বাটি ভিন রাজ্যেও যেত। কিন্তু কাগজের থালা আসার পরেই সমস্যা বেড়েছে। প্রশাসন যদি কোনওভাবে সাহায্য করে, তবে খুব উপকার হবে। প্রসঙ্গত, এক সময় মাওবাদী আন্দোলনের জেরে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল শালবনী সহ জেলার একাধিক ব্লকের মানুষকে। সেই সময় গুলির শব্দে ঘুম ভাঙত গ্রামবাসীদের। একইসঙ্গে আতঙ্কের সঙ্গে ব্যবসা করতেন ব্যবসায়ীরা। এরফলে শালবনী ব্লকের মালিদা এলাকার শালপাতার ব্যবসা তলানিতে নেমে আসে। পর্যাপ্ত পরিমাণে বিক্রি না হওয়ার পাশাপাশি রপ্তানিও বন্ধ হয়ে যায়। তবে ২০১১ সালের পর থেকে ছবিটা একেবারে বদলে যেতে শুরু করে। এক শালপাতা ব্যবসায়ী বলেন, মালিদা ছাড়াও আগে ভীমপুর, লক্ষ্মণপুর, গাডরা এলাকায় প্রচুর মানুষ শালপাতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রতিটি বাড়িতে চাহিদা অনুযায়ী দুই থেকে তিনটি ডাইস মেশিন থাকত। প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিন হাজার পাতা তৈরি হতো। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পাতা তৈরির জন্য আগে শালপাতা জঙ্গল থেকে কুড়িয়ে আনতে হয়। এরপর শুরু হয় শালপাতা পেস্টিং করার কাজ। পরে তা সেলাই করেন শিল্পীরা। তারপর সেই শালপাতা ডাইসের মাধ্যমে থালার আকার ধারণ করে। বর্তমানে ১ হাজার ১০০ টাকায় এক হাজার শাল পাতার থালা বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। একটি থালা তৈরি করতে এক টাকা দশ পয়সা খরচ হয়। সেখানে কাগজের থালা বানাতে ১০ থেকে ৪০ পয়সা খরচ হয় বলে জানা গিয়েছে। জেলা পরিষদের প্রাণী সম্পদ কর্মাধ্যক্ষ জ্যোতিপ্রসাদ মাহাত বলেন, প্রশাসন তাঁদের তৈরি থালা, বাটি কিনে নিলে উপকার হয়।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)