• গবেষণার জন্য জাপানে ডাক পেলেন কাটোয়ার বিজ্ঞানী
    বর্তমান | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: গবেষণার জন্য জাপান থেকে ডাক পেলেন কাটোয়ার রায়েরপাড়া গ্রামের ডঃ শুভ্রজ্যোতি ঘোষ। জাপান সোসাইটি ফর দ্য প্রমোশন অব সায়েন্স(জেএসপিএস) এনার্জি নিয়ে গবেষণার জন্য সারা বিশ্বের ১১জন গবেষককে নির্বাচিত করেছে। ওই গ্রামের ছেলে শুভ্রজ্যোতি তাঁদের মধ্যে অন্যতম। এর আগে তিনি আমেরিকা, চীন থেকেও গবেষণার জন্য ডাক পেয়েছেন। কিন্তু জাপানে গবেষণা করার সুযোগ তিনি হাতছাড়া করতে রাজি নন। তাঁর এই সাফল্যে গর্বিত পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। 

    কাটোয়া-১ ব্লকের রায়েরপাড়া গ্রামের ছেলে শুভ্রজ্যোতি পড়াশোনার ফাঁকে দাদুর সঙ্গে মাঠে যেতেন। নিয়মিত ধান চাষে দাদুকে সাহায্য করতেন। তবে পড়াশোনায় কোনও খামতি রাখেননি। সুদপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০১৪সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর তিনি কলকাতায় যান। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দীনবন্ধু এণ্ডুস কলেজ থেকে কেমিস্ট্রি অনার্স পাশ করেন ২০১৭ সালে। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে ২০১৯সালে এমএসসি পাশ করার পর নেট ও গেট দু’টি পরীক্ষাতেই পাশ করেন। এরপর তিনি গুয়াহাটি আইআইটি থেকে পিএইচডি শেষ করেন। 

    এবার শুভ্রজ্যোতি জাপানে এনার্জি নিয়ে গবেষণা করবেন। জাপান সোসাইটি ফর দ্য প্রমোশন অব সায়েন্স ফেলোশিপ সারা বিশ্বে অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ। এই ফেলোশিপে মাত্র মাত্র সাতাশ বছর বয়সেই বিশ্বের নামী বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেলেন শুভ্রজ্যোতি। গবেষণার বিষয় নিয়ে তিনি জানান, সারা বিশ্বে শক্তির চাহিদা ক্রমবর্ধমান। জীবাশ্ম জ্বালানির সরবরাহ কমছে। এই গবেষণা সফল হলে জল এবং বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইড থেকে শক্তি উৎপাদনের নতুন দিক খুলে যাবে। এতে শক্তির উৎপাদন বাড়বে এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ হ্রাস পাবে। আমাদের মূল লক্ষ্য হল, নতুন মেটাল-অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক(এমওএফ) উপকরণ তৈরি করা, যা দিয়ে কম শক্তির আলোকে বেশি শক্তিসম্পন্ন আলোয় রূপান্তরিত করা আমাদের লক্ষ্য। দৃশ্যমান আলোকে ওই এমওএফের সাহায্যে ইউভি-আলোয় রূপান্তরিত করতে পারব। এতে জ্বালানির সঙ্কট কমানো যাবে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে। বিশ্ব উষ্ণায়নও মোকাবিলা করা যাবে। 

    শুভ্রজ্যোতি বলেন, আমি গ্রামের ছেলে। গ্রামের মাঠ ঘাট পেরিয়েই স্কুল যেতে হতো। পড়াশোনায় ধারাবাহিকতা দরকার। তা হলেই সাফল্যের শিখরে পৌঁছনো সম্ভব। 

    শুভ্রজ্যোতির বাবা সুভাষচন্দ্র ঘোষ কলকাতায় একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। ছোট থেকেই দাদু ও ঠাকুমার কাছে প্রেরণা পেয়েছেন। ছেলের এমন সাফল্যে আনন্দে কেঁদে ফেলেন তাঁর মা পার্বতীদেবী। তিনি বলেন, ছেলে নিজেই পড়াশোনা করেছে। আমি সেভাবে ওকে নজর দিতে পারিনি। ও জাপান যাবে ভেবে গর্ব হচ্ছে। সুদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ডঃ দেবাশিস দে বলেন, ও খুব বিনয়ী ও অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। আমরাও ওর জন্য গর্বিত।
  • Link to this news (বর্তমান)