• মমতার কৌশলে চাপে বিজেপি, ধর্ষণ বিরোধী বিল সমর্থনে রা‌জি
    বর্তমান | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ধর্ষণের শাস্তি ফাঁসি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আনা এই বিলে চাপে পড়ে গেল বিজেপি। বিলকে সমর্থন না জানালে সমাজে ভুল বার্তা যাবে, সেটা উপলব্ধি করেছেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। তাই এই বিলকে সমর্থন জানানো হবে বলেই জানিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের এই সিদ্ধান্ত একপ্রকার বাধ্য হয়েই বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে রাজভবনের উপরেও ‘চাপ’ বজায় রাখার কৌশল নিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। তাদের দাবি, বিলে সম্মতি দিতে রাজভবন যেন দেরি না করে। এর আগে গণপিটুনি প্রতিরোধ বিল বিধানসভায় পাস হয়। গণপ্রহারে কারও মৃত্যু হলে বা খুনের উদ্দেশ্য নিয়ে কাউকে মারা হলে দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। এমন একটি বিলও পাঁচবছর যাবৎ রাজভবনে পড়ে আছে!

    আজ, সোমবার থেকে বসছে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণে হবে শোকপ্রস্তাব পাঠ। তারপর বিধায়কদের মধ্যে বণ্টন করা হবে রাজ্য সরকারের আনা ধর্ষণ বিরোধী বিলের কপি। তার উপরই আলোচনা হবে মঙ্গলবার। অধিবেশনের কোন সময়ে এবং বিলের উপর কতক্ষণ আলোচনা হবে, তা চূড়ান্ত করবে বিধানসভার কার্য উপদেষ্টা কমিটি। ফলে আজকের প্রেক্ষিতে সার্বিকভাবেই এই বিলের গুরুত্ব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে আর জি কর হাসপাতালে জুনিয়র ডাক্তারের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গোটা সমাজ থেকে আওয়াজ উঠেছে, বিচার চাই। ঘটনাটির তদন্তভার এখন সিবিআইয়ের হাতে। এই অবস্থায় ধর্ষণের মতো নারকীয় ঘটনা রুখতে রাজ্যের শাসকের আনা বিল যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল। সাংবিধানিক বিধি-এক্তিয়ারের মধ্যে রাজ্যের হাতে যে ক্ষমতা আছে, তার সূত্র ধরেই এই বিল আনছে রাজ্য। 

    এই পরিস্থিতিতেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি জানিয়েছেন, রাজ্যের বিলকে আমাদের দলের বিধায়করা উদাত্ত কণ্ঠে ও হাত তুলে পূর্ণ সমর্থন জানাবেন।  তবে একইসঙ্গে রাজ্যের আনা এই বিলের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেন সুকান্ত। তিনি বলেন, এই ব্যাপারে এর আগেও অনেক রাজ্য সরকার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সবই পড়ে আছে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে। রাজ্য এই আইন তৈরি করতে পারে না। ফাঁসির সাজার ব্যবস্থা রাজ্য সরকারের এক্তিয়ার নয়। 

    কিন্তু কোনও অবস্থাতেই ‘হাল’ ছাড়঩তে নারাজ তৃণমূল। বিধায়ক সংখ্যার নিরিখে তৃণমূল এককভাবে এই বিল পাস করিয়ে নিতে পারবে। তারপর বিলটি যাবে রাজভবনে। সম্মতি প্রদানে সেখানে যাতে ‘টালবাহানা’ না-হয়, সেই চাপ এখন থেকেই রাজভবনের উপর বা঩ড়িয়েছে তৃণমূল। পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা সংবিধান বিরোধী কোনও কাজ করছি না। তাই বিলে দ্রুত সম্মতি মিলবে, সাংবিধানিক প্রধানের কাছে এটাই প্রত্যাশা। এই বিলের মধ্যে দিয়ে সমাজে একটি নতুন দৃষ্টান্তও স্থাপিত হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)