একশো দিনের কাজে কর্মীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা বাধ্যতামূলক করছে কলকাতা পুরসভা
আনন্দবাজার | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
একশো দিনের কাজে কর্মরত শ্রমিকদের বায়োমেট্রিক হাজিরা বাধ্যতামূলক করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। শনিবার এই সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে এমনটাই জানিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। প্রসঙ্গত, শুক্রবার কলকাতা পুরসভা অধিবেশনে ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে একশো দিনের কাজে টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে কাউন্সিলর এবং বরো চেয়ারম্যানদের ভুমিকা কমে যাওয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেই সময় মেয়র একশো দিনের কাজে বায়েমেট্রিক হাজিরার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। শনিবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে মেয়র বলেছেন, ‘‘আমরা অধিবেশনে এই প্রস্তাব পাশ করেছি। সব তথ্য থাকবে। নিয়মমাফিক কাজে আসতে হবে সকলকে। ডিজিটাল নজরদারি থাকবে।’’ যদিও, পুরসভার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ আগেই ১০০ দিনের কাজে তাদের বিভাগে কর্মরতদের হাজিরা বাধ্যমূলক করেছে। কিন্তু এ বার পুরসভার সব বিভাগেই এই নিয়ম চালু হবে বলে নিশ্চিত করেছেন মেয়র।
কলকাতা পুরসভায় ১৬টি বরো মিলিয়ে বর্তমানে একশো দিনের কাজে কর্মীর সংখ্যা কমপক্ষে ১৫ হাজার। এদের একটি বড় অংশ শহরে জঞ্জাল সাফাই বিভাগে কাজ করেন। বাকি রাস্তা নির্মাণ, নিকাশি, ইঞ্জিনিয়ারিং, উদ্যান, পিএমইউ বিভাগে কর্মরত। এমন সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, বেশিরভাগ কর্মীই শাসকদলের দৌলতে এই কাজে যুক্ত হয়েছেন। তাই অনেকেই হাজিরা খাতায় নাম লিখে চলে যান দলীয় প্রভাব দেখিয়ে। কিন্তু মেয়র নিজে এমনটা বরদাস্ত করতে নারাজ। এ ছাড়াও পুর আধিকারিকদের কাছেও অভিযোগ জমা পড়েছে যে, অনেকেই খাতায় কলমে পুরসভার একশো দিনের কর্মী হলেও, কাজে যোগ দেন না। যারা কাজে আসেন, তাদের অনেকেই কাজ অল্প সময় করেন। আর এদের বেতন কাউন্সিলর ও বরো চেয়ারম্যানরা তালিকা আকারে সই করে পাঠিয়ে দেন। আর মাসের শেষে মজুরি টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যায়।
বর্তমান অব্যবস্থা বন্ধ করতেই কর্মীদের হাজিরা বাধ্যতামূলক করতে চাইছে পুরসভা। তাই সমস্ত বিভাগে কর্মরত একশো দিনের কর্মীদের এখন থেকে বায়োমেট্রিক হাজিরা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে কলকাতা পুরসভায় কাজ করেন প্রায় ১৫ হাজার একশো দিনের কাজের কর্মী। অদক্ষ কর্মীদের মজুরি ২০২ টাকা প্রতিদিন। দক্ষ কর্মীদের ৪০৪ টাকা ও সুপারভাইজারদের ৩০৩ টাকা। নিয়ম অনুসারে আট ঘণ্টা কাজ বাধ্যতামূলক। তাঁদের বিরুদ্ধে নানা সময় কাজে ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাই এ বার সেই সকল কর্মীর বিরুদ্ধে কঠোর হতেই এই নতুন নিয়ম চালু করা হচ্ছে।