• শাস্তি চেয়ে পথে মহিলারা, পাল্টা ‘চাপ’ তৃণমূলের
    আনন্দবাজার | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • দলনেত্রীর নির্দেশের পর মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস আর জি কর কাণ্ডে পথে নামল। রবিবার দুই জেলার একাধিক ব্লকে অবস্থান ও ধর্না কর্মসূচি হয়েছে।

    মেদিনীপুর সদরের পাশাপাশি শালবনি, কেশপুর প্রভৃতি ব্লকে ওই কর্মসূচি হয়েছে। শালবনির পিঁড়াকাটায় অবস্থান হয়েছে। ছিলেন মেদিনীপুরের সাংসদ জুন মালিয়া প্রমুখ। আর জি করের ঘটনা প্রসঙ্গে জুন বলেন, ‘‘অতি জঘন্য। নারকীয় ঘটনা। তার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি।’’ তিনি শুনিয়েছেন, ‘‘আমি এখানে এসেছি একজন মহিলা হিসেবে, একজন মা হিসেবে, একজন মেয়ে হিসেবে, কারও দিদি হিসেবে, কারও বোন হিসেবে। আমাদের বিচার চাই। ন্যায়বিচারই আমাদের লক্ষ্য।’’ অবস্থানে শামিল দলের মহিলা কর্মী, সমর্থকদের উদ্দেশে জুন বলেছেন, ‘‘মেয়ে আর ছেলেকে আলাদা করার যুগ, সময় চলে গিয়েছে। এখন সকলেই সমান। সমাধিকার। মেয়েদের দাবিয়ে রাখার যুগ চলে গিয়েছে। যাঁদের বাড়িতে পুত্র এবং কন্যা সন্তান রয়েছে, তাঁদের বলব, দু’জনকেই এক চোখে দেখুন।’’ মানুষ রাস্তায় নেমেছেন বিচার চাইতেই, শুনিয়েছেন জুন। মেদিনীপুর সদরের কেরানিচটিতে অবস্থান হয়েছে‌। ছিলেন বিধায়ক দীনেন রায়।

    এদিন বিকেলে গড়বেতার নতুনহাটে তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা দীর্ঘক্ষণ অবস্থান-বিক্ষোভ করেন। সেখানে বক্তৃতা করেন বিধায়ক উত্তরা সিংহ প্রমুখ। চন্দ্রকোনা রোডে চৌরাস্তার মোড়ে মহিলা তৃণমূলের ধর্না মঞ্চে ছিলেন জেলাপরিষদের সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি, মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো প্রমুখ। গোয়ালতোড়েও অবস্থান-বিক্ষোভ হয়। নারায়ণগড় ব্লক মহিলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে বেলদা গান্ধী মোড়ে সকাল থেকে চলে ধর্না অবস্থান। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি তথা ফাঁসির দাবির পাশাপাশি সিবিআইয়ের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেওয়া হয়। এ দিনের কর্মসূচিতে মেদিনীপুরের তৃণমূল সাংসদ জুন মালিয়ার উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি আসতে পারেননি। ধর্না কর্মসূচির পর বেলদায় বিকেলে মিছিলের ডাক দিয়েছিল মহিলা তৃণমূল। মিছিল বেলদা বিদ্যাসাগর পল্লি থেকে শুরু করে কালীমন্দির পর্যন্ত যায়। ছিলেন নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্যকান্ত অট্ট, ব্লক মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী সুপর্ণা জৈন-সহ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুকুমার জানা, সহ সভাপতি মিহির চন্দ প্রমুখ। মিছিল ও ধর্না থেকে দোষীদের ফাঁসির দাবি তোলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবির বিরোধিতাও করা হয়। ব্লক মহিলা নেত্রী সুপর্ণা বলেন, ‘‘আর জি করে যে ঘটনা ঘটেছে তা নিন্দনীয়। দলনেত্রীও দোষীদের শাস্তির দাবি তুলেছেন। কিন্তু বিজেপি রাজনীতি করছে।" কেশিয়াড়িতেও কর্মসূচি হয়েছে মহিলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে। কেশিয়াড়ি বাসস্ট্যান্ডে ধর্না অবস্থানে বসেছিলেন নেতৃত্বরা।

    ঝাড়গ্রাম শহর মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী কেয়া আচার্যর নেতৃত্বে কর্মসূচি হয় পাঁচ মাথা মোড়ে। সেখানে ঝাড়গ্রামের পুরপ্রধান কবিতা ঘোষ-সহ শিক্ষক ও যুব সংগঠনের নেতা-নেত্রীরা ছিলেন। ওই কর্মসূচি চলাকালীন ঝাড়গ্রাম শহরের কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনের প্রাক্তনী সংসদ আয়োজিত প্রতিবাদ মিছিল পাঁচ মাথা মোড়ে আসে। ওই সময়ে বক্তৃতা করছিলেন শিক্ষক নেতা জয়দীপ হোতা। তৃণমূলের কর্মসূচি কিছুক্ষণ বন্ধ করা হয়। প্রাক্তনী সংসদের ওই মিছিল পাঁচমাথা মোড় ছেড়ে যাওয়ার পরে ফের বক্তৃতা শুরু করেন জয়দীপ। তিনি বলেন, ‘‘অরাজনৈতিক সংগঠন বিচার চেরে প্রতিবাদ মিছিল করছে। আমাদের দাবিও একই। তাই ওই কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়ে আমাদের কর্মসূচি কিছুক্ষণ বন্ধ রাখা হয়েছিল।’’ ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের লোধাশুলি, সাঁকরাইলের রোহিনী এলাকাতেও কর্মসূচি হয় এ দিন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)