মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশই সার। পূর্ত দফতরের জায়গা দখল করে নির্মাণ বন্ধ বা পুনরুদ্ধার তো দূর, খোদ তৃণমূল পরিচালিত আরামবাগের সালেপুর ২ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে পূর্ত দফতরের জায়গায় বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠল।
স্থানীয় বড়ডোঙ্গল সেতু সংলগ্ন রাস্তা গায়েই ওই নির্মাণটি হচ্ছে। সম্প্রতি গভীর গর্ত করে ওই নির্মাণ কাজের ভিত তৈরির বিষয়টি স্থানীয় মানুষ পূর্ত দফতরের নজরে এনেছেন। পঞ্চায়েতের দাবি, ঘর নির্মাণ হবে না। পাকা রাস্তা থেকে পঞ্চায়েতের মার্কেট কমপ্লেক্সে যেতে বাঁধানো চাতাল হবে।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, এর আগে গত ২০২১ সালে পূর্ত দফতরের জায়গা দখল করেই মার্কেট কমপ্লেক্সটি হয়েছে। এখন ফের সামনের জায়গাটায় রেস্তরাঁ নির্মাণ করতেই ওই রকম ভিত করে মজবুত করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে রাস্তা সম্প্রসারণে ব্যাঘাত ঘটতে পারে জানিয়ে তাঁরা পূর্ত দফতরের বিরুদ্ধে উদাসীনতারও অভিযোগ তুলেছেন।
উদাসীনতার অভিযোগ অস্বীকার করে মহকুমা পূর্ত দফতরের এক বাস্তুকার বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে। সরকারি জমিতে, সরকারেরই অন্য সংস্থার কোনও প্রকল্প হলেও সংশ্লিষ্ট সংশ্লিষ্ট দফতরের (পূর্ত) অনুমতি নেবার প্রয়োজন। সেটা নেওয়া হয়নি”।
পূর্ত দফতরের অনুমতি নেওয়া হয়নি স্বীকার করে পঞ্চায়েত প্রধান শেফালি সর্দার জানান, আজ, সোমবারই পূর্ত দফতরের অনুমোদন নেওয়া হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা কোনও ঘর নির্মাণ করছি না। পাকা রাস্তা থেকে মার্কেট কমপ্লেক্সে যেতে চাতাল ঢালা হবে।” অন্য কথা বলেছেন একই দলের উপপ্রধান উত্তম বেরা। তাঁর দাবি, ‘‘জায়গাটা পূর্ত দফতরের নয়। সরকারি খাস জায়গা বলেই জানি। সেখানে সাইকেল রাখার জায়গা হচ্ছে।’’
আবার, একই গ্রামে প্রাচীন একটি ‘হাট পুকুর’ নামে জলাশয় ভরাটেও পঞ্চায়েতর মদতের অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের আরামবাগ ব্লক সভাপতি বলেন, “পূর্ত দফতরের জায়গা দখল করে নির্মাণের বিষয়টি আমার কাছেও কিছু মানুষ জানিয়েছেন। বিষয়টি সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি জানান, বেআইনি দখল বা জলাশয় ভরাট নিয়ে দলও কড়া।
অন্য দিকে, খানাকুল ১ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত পোল ২ পঞ্চায়েত এলাকার রাধাবল্লভপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি রাস্তার গায়ে খাল বুজিয়ে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। সেই নির্মাণ কাজে বেশ কিছু গাছও কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ। রাধাবল্লভপুরের বিষয়টিতেও পঞ্চায়েতের মদতের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় মানুষ এবং ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি পুলিশ সহ সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতরে জানিয়ে বেআইনি নির্মাণের দাবি করেছেন।
পঞ্চায়েত প্রধান সাহেব প্রামাণিক অবশ্য দাবি করেছেন, “আমার অজান্তেই এ সব হচ্ছে। প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।” বন দফতর এবং সেচ দফতর থেকে ঘটনার তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওবার কথা বলা হয়েছে।