আর জি করে চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে রবিবার দিনভর মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদ মিছিল হল। রবিবার বিকেলে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনের সামনে মহিলাদের ডাকে বহু মানুষ জমায়েত হয়েছিলেন। সেখানে একটি নাট্য সংস্থা ‘একটি নারী ও আমরা’ নামে পথনাটিকা পরিবেশন করে। পরে ওই জায়গা থেকে একটি মিছিলও বেরোয়। সেটি ব্যারাক স্কোয়ারের পাশ দিয়ে গিয়ে গির্জা মোড়, খাগড়া, ইন্দ্রপ্রস্থ হয়ে আবার রবীন্দ্র সদনের সামনেই শেষ হয়।
এই প্রতিবাদ মিছিলের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, বহু মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ সত্ত্বেও আর জি করের ঘটনায় এখনও অভিযুক্তদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়নি। তাই তাঁরা দল-মত নির্বিশেষে লাগাতার প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছেন। এ দিনও কোনও রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের ব্যানার ছাড়াই মিছিল বের হয়েছিল। এক উদ্যোক্তা বলেন, ‘‘আর জি করের ঘটনায় অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যতদিন না তাদের শাস্তি হচ্ছে, ততদিন আমাদের প্রতিবাদ, আন্দোলন চলবে।’’ এ দিনের কর্মসূচিতে বহরমপুরের বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। শহরের সাংস্কৃতিক জগতের বহু লোকজনকেও মিছিলে পা মেলাতে দেখা গিয়েছে। একই সময়ে লালগোলায় কয়েকশো মানুষের একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হয়েছে। বিকেলে জিয়াগঞ্জ নেতাজি মোড়ে পথনাটিকার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণ করে। পরে হাজার খানেক মানুষের পদযাত্রা শহর ঘোরে। এ দিন সকালে বহরমপুরেও মূক ও বধিরদের একটি সংগঠনের উদ্যোগে দোষীদের শাস্তির দাবিতে মিছিল হয়েছে। যোগদানকারীদের বুকে কালো ব্যাজ লাগানো ছিল।
বহরমপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল গিয়েছে। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ রোজই হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যায় নাটক করে প্রতিবাদ জানায় বহরমপুরের একটি নাট্য সংস্থা। বহরমপুরের টেক্সটাইল কলেজ মোড়ে ওই নাট্য সংস্থা পথনাটিকার মাধ্যমে আর জি করের ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি তুলেছে। সেখানে বহরমপুরের বেশ কয়েকটি নাট্য সংস্থার শিল্পীরা আবৃত্তি, গান পরিবেশন করেন। সেখানে বহরমপুর শহরের সাংস্কৃতিক জগতের লোকজন উপস্থিত হয়েছিলেন। ছিলেন সাধারণ মানুষও। পথচলতি অনেকেই দাঁড়িয়ে পড়ে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি দেখেন। এই প্রথম বহরমপুরে পথনাটিকার মাধ্যমে আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হল।
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ এখন আর শহর এলাকায় সীমাবদ্ধ নেই। শনিবার বিকেলে প্রতিবাদ মিছিলে শামিল হন নওদার সর্বাঙ্গপুর হাই স্কুলের জাতীয় সেবা প্রকল্পের প্রাক্তন স্বেচ্ছাসেবিকারা। ছিলেন বহু মহিলা, স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রীরা। মিছিল গ্রাম ঘোরে। ওই স্কুলের শিক্ষক নীতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রী, গ্রামের সাধারণ মানুষ যে ভাবে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন, তা প্রশংসনীয়।’’
একই দাবিতে তৃণমূলের মহিলারাও বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করেছেন। এ দিন রঘুনাথগঞ্জে এমনই একটি মিছিলে শামিল হয়েছিলেন জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমান ও সেখানকার বিধায়ক জাকির হোসেন। বহরমপুরে ব্যারাক স্কোয়ারের পাশে কোর্ট বাজারের সামনে বিক্ষোভ করেছে শাসক দলের মহিলা শাখা।