আরজি কর কাণ্ডে যাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কুৎসা করছেন তাঁদের মা-বোনেদের ছবি বিকৃত করে বাড়ির দেওয়ালে টাঙানোর হুঁশিয়ারি অশোকনগরের তৃণমূল নেতা অতীশ সরকারের। তাঁর হুঁশিয়ারির ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই পাল্টা সরব হন বিরোধীরা। অতীশকে সাসপেন্ড করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের নেতা কুণাল ঘোষ এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে সাসপেন্ড করার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজ্যের শাসক দলের তরফে তাঁর আচরণের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।ঠিক কী মন্তব্য করেছিলেন অশোকনগরের তৃণমূল নেতা?
অশোকনগর কল্যাণগড় পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর টুম্পা সরকারের স্বামী তথা প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর অতীশ সরকার। তিনি সম্প্রতি আরজি কর কাণ্ডে দোষীদের শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদ সভায় অংশ নেন। সেই সভায় তাঁর একটি মন্তব্য0 সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি এই সময় অনলাইন)।
আমার মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছেঅতীশ সরকার
অতীশ সরকারকে ভাইরাল ভিডিয়োয় বলতে শোনা যায়, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোঁস করতে বলেছেন। আমরা যদি ফোঁস করে আপনার মা এবং বোনের নামে কুৎসা রটিয়ে বাড়ির দেওয়ালে টাঙিয়ে আসি, তা হলে সেই পোস্টার খুলতে পারবেন না। এই প্রতিবাদ মঞ্চে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব নিয়ে বলে গেলাম।' তিনি আরও বলেন, ‘পাড়ায় পাড়ায় যদি আমরা ফোঁস করি আপনারা বাড়ি থেকে বার হতে পারবেন তো?’ অতীশের এই মন্তব্য ঘিরে রাজ্য রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে যায়। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই ভিডিয়ো নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে অতীশকে ‘তৃণমূলের লুম্পেন বাহিনী’-র সদস্য বলেও তোপ দাগেন।
সাসপেন্ডের সিদ্ধান্ত তৃণমূলের
অতীশের মন্তব্য ঘিরে যখন সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরা, সেই সময় তাঁর পাশে দাঁড়াল না দল। বরং এই নেতার মন্তব্যের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল। সোমবার তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন। সেখানে লেখেন, ‘অশোকনগর কল্যাণগড় পুরসভা এলাকার যে দলীয় নেতা প্রতিবাদী মা-বোনদের ছবি সংক্রান্ত বিকৃত মন্তব্য করেছিলেন, এই আচরণের নিন্দা করছে দল। তাঁকে চিহ্নিত করে এক বছরের জন্য সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী বলেন, 'ওই নেতাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।'
কী বলছেন সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল নেতা?
দল পদক্ষেপ করার পর অতীশ সরকার এই সময় অনলাইন-কে বলেন, 'আমার মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। আমি বলতে চেয়েছিলাম, যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কুৎসা করছেন, আমরা যদি পাল্টা তাঁদের পরিবারকে নিয়ে কুৎসা করি, তাহলে কি তাঁদের ভালো লাগবে? কিন্তু আমার মূল মন্তব্য দেখানো হয়নি। ওই ফুজেট সম্পাদিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘মহিলাদের কোনও আঘাত করতে চাইনি। কেউ আমার মন্তব্যে আঘাত পেয়ে থাকলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’