BJP-র অভিযানে ধুন্ধুমার, আটক নিশীথ, হুগলিতে পুলিশকে লক্ষ্য করে জুতো
এই সময় | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আরজি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে এবং রাজ্যে নারী সুরক্ষার দাবিতে জেলায় জেলায় বিজেপির পক্ষ থেকে জেলাশাসকের দপ্তর ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়া হয়েছিল সোমবার। একাধিক জেলায় জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। আসানসোল থেকে উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়ি, হুগলি থেকে পূর্ব মেদিনীপুর একাধিক জেলায় খণ্ডযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়। গ্রেপ্তার করা হয় একাধিক বিজেপি নেতা-কর্মীদের।কোচবিহারের সাগরদিঘি এলাকায় বিজেপি নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। জেলাশাসকের অফিস থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুলিশ সুপারের অফিসে ইটবৃষ্টি করেন বিজেপির কর্মী এবং সমর্থকেরা বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে গিয়ে পাল্টা কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক-সহ ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলাশাসক দপ্তর ঘেরাও কর্মসূচিতে ছিলেন তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ তথা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি নেতৃত্বরা। প্রথম গেট ভেঙে বিজেপি কর্মীরা ঢুকলেও দ্বিতীয় গেটে ঢোকার আগেই পুলিশের বাধায় আটকে যায় আন্দোলনকারীরা। জেলাশাসকের দপ্তরের রাস্তার উপর বসে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি তথা হলদিয়ার বিধায়িকা তাপসী মণ্ডল সহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন সেখানে।
হুগলি জেলায় তিন নম্বর গেট বিজেপি কার্যালয় থেকে মিছিল শুরু হয়ে ঘড়ির মোড় এর কাছে আসতেই পুলিশ মিছিল আটকানোর চেষ্টা করে বিজেপি কর্মীরা পুলিশকে ঠেলে এগিয়ে যেতে থাকে। ব্যারিকেড-এর কাছে যেতেই পুলিশ আটকে দেয় মিছিল। এরপরেই শুরু হয় বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি। বিজেপির মহিলা কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে জুতো দেখাতে থাকে। পরে পুলিশের উদ্দেশেও সেই জুতো ছুড়ে দিতেও দেখা যায় এক মহিলাকে। বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক পম্পা অধিকারী বলেন , ‘সবাই দেখেছেন পুলিশ কী ভাবে লাঠি দিয়ে মারধর করেছে। মেয়েদের লাঠি দিয়েও মারা হয়েছে। ওদের মুখে জুতোটা মারা উচিত ছিল, কিন্তু আমি সেটা করিনি , আমি ওদের দিকে ছুড়ে দিয়েছি।’ সামনে সেই পুলিশ অফিসার থাকলে আমি জুতোটা মুখে মারতাম । এখন খালি তো জুতোটা ছুড়ে দিয়েছি।
বর্ধমান জেলায় বর্ধমান স্টেশন থেকে মিছিল করে কোর্ট কম্পাউন্ডে আসে বিজেপি কর্মীরা। কোর্ট কম্পাউন্ডের কাছে প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে দ্বিতীয় ব্যারিকেডের কাছে পৌঁছতেই তাদের আটকে দেয় পুলিশ। এই ঘেরাও নিয়ে ব্যাপক পুলিশি প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। প্রস্তুত ছিল র্যা- সহ সিভিক ভলেন্টিয়ার ও ছিল জলকামান। উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসাররা। কার্জন গেটে এসে প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে বিজেপি কর্মীরা। তারপর বিজেপি কর্মীরা দ্বিতীয় ব্যারিকেডের সামনে আসতেই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। বিজেপির দুই জেলা সভাপতি-সহ সাতজনের প্রতিনিধিদল জেলাশাসক রাধিকা আইয়ারের কাছে ডেপুটেশন দেয়।
বিজেপির জেলাশাসক দপ্তর ঘেরাও অভিযানে বীরভূমের জেলাশাসক দপ্তরের সামনেও রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ দিন দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ সিউড়িতে জেলা শাসকের দপ্তরের সামনে উপস্থিত হন বিজেপির নেতা ও কর্মীরা। পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচির কথা মাথায় রেখে ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তায় ঘিরে দেওয়া হয়েছিল গোটা জেলাশাসক দফতর চত্বর। প্রায় ১৫ মিনিট খণ্ডযুদ্ধ চলার পর অবস্থান বিক্ষোভে বসেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা।