• হরিয়ানায় গণপিটুনিতে মৃত সাবিরের পরিবারের একজনকে চাকরি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • হরিয়ানায় গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে বাংলার যুকের। গরুর মাংস খাওয়ার 'অপরাধে' নাকি সাবিরকে মারা হয়েছিল। এই ঘটনায় আঙুল উঠেছে হিন্দুবদী গোরক্ষক কমিটির দিকে। এদিকে বিজেপি শাসিত হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীও এই ইস্যুতে নিজের দায় ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছেন। পাশাপাশি তিনি এই ঘটনাটিকে 'গণপিটুনি' বলে মানতে নারাজ। তিনি আবার পালটা প্রশ্ন করেছেন, 'গরুর মাংস খাওয়ার অভিযোগ উঠলে' আবেগের বসে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে তিনি তা কীভাবে থামাবেন? আর এই সবের মাঝে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পাশে দাঁড়ালেন বাসন্তীর ছেলেটির পরিবারের। এই নিয়ে বড় আপডেট দিলেন তৃণমূলের কুণাল ঘোষ। তিনি জানান, মৃতের পরিবারের এক সদস্যকে চাকরি দেওয়া হবে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।

    কুণাল জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা প্রথম থেকেই এই ঘটনার ওপর নজর রেখে চলেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে তিনি লেখেন, 'বিজেপিশাসিত হরিয়ানায় পরিকল্পিত গণপিটুনিতে নিহত বাংলার শ্রমিক সাবির মল্লিকের পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মৃত সাবিরের পরিবারের একজনকে চাকরি দিচ্ছেন তিনি। এছাড়া তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে আর্থিক সাহায্যও করা হয়েছে পরিবারকে। মুখ্যমন্ত্রী খবর রেখেছেন, যা যা করণীয় করছেন। প্রতিনিধিও পাঠান।'

    জানা গিয়েছে, মৃত যুবক দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর বাসিন্দা ছিলেন। গরুর মাংস খায়, এই সন্দেহেই নাকি হরিয়ানাতে সাবিরকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে মারে গোরক্ষা কমিটির সদস্যরা। পরে একটি খালের ধার থেকে উদ্ধার হয় সাবিরের দেহ। এদিকে পরিবারের অভিযোগ, হরিয়ানা পুলিশ সাবিরের খুনের বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে না। পরিবারের সদস্যদের কথায়, এলাকায় কাজ না পেয়ে প্রায় তিন বছর আগে স্থানীয় কয়েক জন যুবককে নিয়ে হরিয়ানায় যান সাবির। নিহত যুবকের শ্যালকও তার সঙ্গে গিয়েছিল সেখানে কাজ করতে। সেই শ্য়ালকের সঙ্গেই বাড্ডা থানা এলাকায় থাকতেন বছর তেইশের সাবির। সেখানে কাগজ কুড়নোর কাজ করতেন তিনি। পরিবারের অভিযোগ, হরিয়ানার গো-রক্ষা কমিটির সদস্য়রা তাঁকে গরুর মাংস খাওয়ার অভিযোগে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে।

    মৃতের পরিবারের দাবি, গোরক্ষক কমিটির লোকেরা সাবিরকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পরে একটি নিকাশি খালের পাশ থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, এরপর সাবিরের শ্য়ালক সুজাউদ্দিনকে থানায় তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে অবশ্য় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। গত ৩০ অগস্ট দুপুরে বাসন্তীর বল্লারটপ গ্রামে পৌঁছয় সাবিরের মৃতদেহ। এদিকে এই বিষয়ে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ঘটনাটিকে ‘গণপিটুনি’ আখ্যা দেওয়া ঠিক নয়। তাঁর কথায়, 'গো-রক্ষার জন্য বিধানসভায় কঠোর আইন করা হয়েছে এবং তাতে কোনো আপস নেই। গ্রামবাসীদের গরুর প্রতি এতটাই শ্রদ্ধা যে তাঁরা যদি এমন কিছু জানতেও পারেন, তাহলে তাঁদের কে আটকাতে পারে? আমি বলতে চাই, এই ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে এবং এসব ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক।'

    হরিয়ানা পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া এফআইআর অনুসারে, ২৭ অগস্ট সকালে বেশ কয়েকজন যুবক এসে সাবিরদের বস্তিতে চোটপাট শুরু করে। এরপর সাবিরকে স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যায় তারা। অভিযোগ, সাবির ছাড়াও অসমের বাসিন্দা আসিরুদ্দিন নামে আরেক পরিযায়ী শ্রমিককেও বাসস্ট্যান্ডে ডেকে নিয়ে যায় সেই যুবকের দল। সেখানে দুজনকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পথচারীরা বাধা দিলে তারা দুজনকে তাদের মোটরসাইকেলে করে অন্য কোনও জায়গায় নিয়ে যায়। পরে সাবিরকে একটি খালের কাছে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। আসিরুদ্দিনকে অন্য জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)