একাধিক সংবদ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, নির্যাতিতার শরীর থেকে যে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তার সঙ্গে সঞ্জয় রায়ের ডিএনএ মিলে যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও সঞ্জয় রায় এখনও নিজেকে নির্দোষ দাবি করছে তদন্তকারীদের সামনে। আর এরই মাঝে সঞ্জয়ের আইনজীবী কবিতা সরকার দাবি করলেন, সঞ্জয় রায় যে দাবি করছে, সেটার প্রমাণ রয়েছে সিসিটিভি ফুটেজেই। তাঁর কথায়, 'সঞ্জয় যা বলছে তা মিলিয়ে দেখা যাবে সিসিটিভি ফুটেজেই।' কবিতা সরকার আরও বলেন, 'যদি সঞ্জয় এত সহজে সেমিনার রুমে চলে গিয়ে থাকতে পারে, তাহলে এর থেকেই প্রমাণ হচ্ছে সেই রাতে নিরাপত্তায় গাফিলতি ছিল। সঞ্জয়ের মতো অন্য যে কেউ সেখানে চলে যেতে পারত।' এদিকে কবিতা দাবি করেন, সিবিআই এখনও তাদের এফআইআর-এর ফ্রি কপি দেয়নি। বদলে নাকি তাদেরকে আদালত থেকে সার্টিফায়েড কপি সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত একজনকেই ধরতে পেরেছে পুলিশ। সেই ধৃত সঞ্জয় রায় এবার নিজের আইনজীবীর কাছে জানিয়েছে যে আদালতে সে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি জানাবে। বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে থাকা সঞ্জয় রায়ের কয়েকদিন আগেই পলিগ্রাফ টেস্ট হয়েছিল। সেই টেস্ট নিয়েও আপডেট দিলেন সঞ্জয়ের আইনজীবী কবিতা সরকার। কবিতা সরকার জানিয়েছেন, সঞ্জয় রায়কে পলিগ্রাফ টেস্টে ১০টির মতো প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার মধ্যে একটি প্রশ্ন ছিল - খুন করার পরে তুমি কী করেছ? জবাবে নাকি সঞ্জয় বলে, আমি কোনও খুন করিনি। তাই এই ধরনের প্রশ্ন অবান্তর। সঞ্জয়ের নাকি দাবি ছিল, সে যখন ঘরে ঢুকেছিল, তখন অচৈতন্য অবস্থায় সেই চিকিৎসক পড়ে ছিলেন বিছানায়। এদিকে পলিগ্রফ টেস্টে সঞ্জয়কে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন করা হয় বলে জানান আইনজীবী কবিতা সরকার। এছাড়াও ঘটনা সম্পর্কেও প্রশ্ন করা হয়েছিল তাকে। সঞ্জয় অবশ্য দাবি করছে, সে নির্যাতিতাকে চিনত না। তার ঘাড়ে জোর করে দোষ চাপানো হচ্ছে। এদিকে সঞ্জয় যদি নিজে খুন না করে থাকে, তাহলে সে পুলিশকে ঘটনাটি জানায়নি কেন? এই প্রশ্নের জবাবে ধৃত নাকি বলে, সে ভয় পেয়ে পালিয়ে গিয়েছিল।
এদিকে গত ১৩ অগস্ট সিএফএসএল কলকাতায় কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে ডিএনএ রিপোর্টের জন্য নমুনা জমা দেওয়া হয়। নমুনার মধ্যে তিলোত্তমার দেহ থেকে উদ্ধার ভ্যাজাইনাল সোয়াব, নখে আটকে থাকা ত্বক এবং চুলের নমুনা, অকুস্থলে পাওয়া চুলের নমুনা জমা দেওয়া হয়। তাছাড়া তিলোত্তমার পোশাক, কম্বল, চাদরও নমুনা হিসেবে জমা পড়ে। সঙ্গে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের রক্তের নমুনা, তার ওই রাতে পড়ে থাকা পোশাকও জমা দেওয়া হয়েছিল। এরপর ২৬ আগস্ট আদালতের অনুমতি নিয়ে ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে পায় সিবিআই। তার মধ্যে ডিএনএ রিপোর্টও হাতে আসে তদন্তকারীদের। তবে তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি সিবিআই। রিপোর্ট অনুযায়ী, তদন্তভার পাওয়ার পরে সিবিআই নিজেরাই সিএফএসএল-কে কিছু নমুনা দিয়েছে পরীক্ষার জন্যে। সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট এখনও হাতে পায়নি তারা। এদিকে সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধুমাত্র সঞ্জয়ের ডিএনএ নমুনাই নাকি মিলেছে ঘটনাস্থলে। দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তির ডিএনএ সেখানে পাওয়া যায়নি। তবে এই মামলায় ফরেন্সিক নিয়ে বহু প্রশ্ন রয়েছে। এই আবহে এই ডিএনএ ফলাফলকেই চূড়ান্ত হিসেবে ধরা হচ্ছে না বলে দাবি সিবিআই সূত্রে।