সুমন করাতি, হুগলি: মেরেকেটে হাতে আর বাকি মাত্র এক মাস। ফলে তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে জোরকদমে। জেলার পুজো হলেও অন্যান্য বারের এবার কলকাতাকে টক্কর দিতে তৈরি শ্রীরামপুর। সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুজো বলে কথা, ফলে চমক তো থাকতেই হবে। মালয়েশিয়ার টুইন টাওয়ার, গুজরাটের বিখ্যাত মন্দিরের পর এবার পুজোয় লন্ডনের স্বামীনারায়ণ মন্দিরের আদলে মণ্ডপ গড়ে চমকে দিতে চায় শ্রীরামপুরের পল্লিগোষ্ঠী ও ব্যবসায়ী সমিতি পুজো কমিটি। পুজোয় এবার তাদের ৭০ লক্ষ টাকা।
রথের দিন খুঁটি পুজোর মধ্যে দিয়ে দুর্গাপুজোর সূচনা হয় শ্রীরামপুরের এই পুজোর। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রথের পরদিন থেকে শুরু হয়েছে মণ্ডপ তৈরির কাজ। সেই কাজ অনেকখানি এগিয়েও গিয়েছে। ইতিমধ্যেই বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিশাল মণ্ডপের একটি কাঠামো। মণ্ডপে ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশ, বাটাম, প্লাই। তার সঙ্গে পুরো মণ্ডপ জুড়েই থাকছে ফাইবার। মণ্ডপের ভিতরে থাকছে লক্ষ্মী, নারায়ণ ও গণেশের মূর্তি। এছাড়াও থাকছে ৩০ ফুটের একটি বিশাল ঝাড়। যার মধ্যে সম্পূর্ণটাই ফাইবারের কাজ করা হবে। মৃন্ময়ী মূর্তির চিন্ময়ী রূপদানও চলছে মণ্ডপে।
অভিনব এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে মণ্ডপ নির্মাতা বাবাই বসাক বলেন, ‘স্বামীনারায়ণ কথার মধ্যে অনেক অর্থ লুকিয়ে রয়েছে। নারায়ণের মধ্যে আমরা ৩৩ কোটি দেব-দেবীকে দেখতে পাই। তাই প্রথমে আমরা নারায়ণ ও গণেশের পুজো করেই শুরু করি যে কোনও পুজো। এছাড়া মণ্ডপ সজ্জায় মানুষের সঙ্গে মানুষের একটা মেলবন্ধন ঘটানোর চেষ্টা করেছি। মণ্ডপ নির্মাণ করতে পুরোটাই ব্যবহার করা হচ্ছে ফাইবার। তবে এই মণ্ডপ শ্রীরামপুরের বুকেই এই প্রথম তৈরি হতে চলেছে। আমাদের আশা এই উদ্যোগ মন জয় করবে দর্শনার্থীদের।’
পুজো কমিটির সম্পাদক সন্তোষ কুমার সিং বলেন, ‘এই পুজো সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুজো নামেই পরিচিত। সাবেকিআনা ও আধুনিক ছোঁয়ার মেলবন্ধনেই এই পুজো হয় প্রতিবছর। শোলার সাজে সাজানো হয় প্রতিমাকে। অনেক মানুষ আছেন যারা লন্ডনে যেতে পারবেন না, তাই লন্ডনের স্বামীনারায়ণ মন্দিরের আদলেই মণ্ডপ নির্মাণ করা হচ্ছে। পুজোর দিনগুলিতে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য নিজস্ব প্রায় ৫০০ স্বেচ্ছাসেবক রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পুলিশ মোতায়ন করা হবে। মণ্ডপের ভিতর-বাইরে পুরোটাই সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হবে। এবার আমাদের পুজোর বাজেট প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা।’