• কলার ভেলার তলায় চিনির প্যাকেট বেঁধে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশ
    বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: রাতের অন্ধকারে পদ্মা নদীতে চিনি পাচার শুরু হয়েছে। ভারত বাংলাদেশের জলঙ্গি সীমান্ত দিয়ে দেদার চলছে চিনি পাচার। রাতের দিক পদ্মায় জলের স্রোত থাকে বাংলাদেশের অনুকূলে। সেই সুযোগে রাতের নির্দিষ্ট সময়ে কলার ভেলার তলায় চিনির প্যাকেট বেঁধে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ওপার বাংলায়। দেশ অশান্ত হলেও বাংলাদেশে থেমে নেই পাচারকারীরা। সীমান্তে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বেড়েছে। বিশেষ করে রাতের দিকে ওপর বাংলায় দুষ্কৃতীরা জল সীমান্তের কাছাকাছি চলে আসছে। মিষ্টি থেকে ঝাল, পাচার চলছে সবকিছুর। চিনি থেকে কাঁচালঙ্কা সব কিছু পাচার করছে এপারের দুষ্কৃতীরা। টাকা কিংবা সোনার বিনিময়ে লেনদেন চলছে। 

    অশান্ত বাংলাদেশে চিনির দাম আকাশছোঁয়া। রীতিমতো কালোবাজারি শুরু হয়েছে ওপার বাংলায়। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভারতের সীমান্ত লাগোয়া গ্রামে চোরাকারবারীরা মিষ্টি দানা পাচারের জন্য উঠে পড়ে নেমেছে। তাই এপারের পাচারকারীদের কাছে এখন নয়া বাজি চিনি। কুইন্ট্যাল কুইন্ট্যাল চিনি পাচার করতেই উঠে পড়ে নেমেছে তারা। ভারতের সীমান্ত পেরলে চিনির দাম একলাফে চারগুণ হয়ে যাচ্ছে। মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি সীমান্ত হয়ে উঠেছে চিনি পাচারের মুক্তাঞ্চল। এপারের ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা দামের চিনি ওপারে কেজি প্রতি ১২০ টাকা থেকে ১৩০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে ব্যাপক মুনাফা হচ্ছে পাচারকারীদের। তাই প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি চিনি কিনছেন সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দারা। পাচারকারীরা নিজেরা চিনি পাচার করতে গিয়ে বারবার বিএসএফের বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। তাই ঘুরপথে পাচারের জন্য সীমান্তের চর লাগোয়া গ্রামবাসীদের কাজে লাগাচ্ছে তারা। চিনির প্যাকেট টাইট করে পলিথিন পেপারে মুড়ে ভালো করে সেলোটেপ দিয়ে লাগিয়ে ভেলার তলায় বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। ভেলার উপরে থাকছে কচুরিপানা। সাধারণ চোখে দেখে বোঝার উপায় নেই, যে ওই কচুরিপানার তলায় চলে যাচ্ছে হাজার হাজার টাকার চিনি। বাংলাদেশের পাড়ে গিয়ে ভেলা থামতেই, সেখান থেকে খুলে নেওয়া হচ্ছে প্যাকেট। শনিবার রাতেও বিএসএফ জলঙ্গি সীমান্ত থেকে চিনি উদ্ধার করেছে। এক সপ্তাহে কয়েক কুইন্টাল চিনি উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। 

    বিএসএফের এক আধিকারিক বলেন, অনেকদিন চিনি পাচার বন্ধ ছিল। ফের শুরু হয়েছে। আমরা নিয়মিত চেকপোস্ট এলাকায় তল্লাশি করছি। অনেকেই প্রয়োজনের তুলনায় চারগুণ বেশি চিনি কিনছেন। কিছু বললেই, নানা অজুহাত দিচ্ছে। আর এই চিনি রাতের অন্ধকারে নানা কায়দায় ওপারে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রায়ই চিনি উদ্ধার করছি। রাতের দিকে বাংলাদেশের দিকে যখন পদ্মায় স্রোত থাকে, সে সময়ে চিনি ভেলার নীচে বেঁধে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সীমান্তের বাসিন্দাদের অনুরোধ করব, আপনারা সামান্য অর্থের জন্য কেউ অসাধু কাজে জড়িয়ে পড়বেন না।
  • Link to this news (বর্তমান)