• লক্ষ্য স্বনির্ভরতা, নিজস্ব শোরুমে জনগোষ্ঠীর পোশাক বিক্রি করছেন চা বাগানের মহিলারা
    বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: কাজের খোঁজে মহিলা শ্রমিকদের ভিনরাজ্যে যাওয়া আটকাতে দিশা দেখাচ্ছেন কালচিনির রুগ্‌ণ মধু চা বাগানের মহিলারা। স্বনির্ভর হতে বাগানে গড়ে উঠেছে ‘মধু বাগান মহিলা মাল্টিপারপার্স কো-অপারেটিভ সোসাইটি’। সোসাইটির তত্ত্বাবধানে ওল্ড হাসিমারায় শোরুম খুলে আদিবাসীদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী পোশাক বিক্রি করছেন বাগানের মহিলারা। এবার সেই পোশাক তৈরির কারখানার জন্য সরকারিভাবে সোসাইটিকে জমি দেওয়ার উদ্যোগও শুরু হয়েছে। পাশাপাশি আরও আয় বাড়াতে সোসাইটির মহিলারা বাগানেই ভার্মি কম্পোস্টও উৎপাদন করে বিক্রিও করছেন। 

    ওল্ড হাসিমারায় মহিলা সোসাইটির ওই শোরুম ঘুরেও দেখে গিয়েছেন কৃষি বিপণন দপ্তরের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। মন্ত্রী বলেন, গত ৯ আগস্ট ওই শোরুম চালু হয়। প্রায় এক মাসের মধ্যেই ওই শোরুম থেকে ৪০ হাজার টাকার আদিবাসী পোশাক বিক্রি হয়েছে। ওই মহিলা সোসাইটিকে সরকারের তরফ থেকে সর্বোতভাবে সাহায্য করা হবে। পোশাক তৈরির কারখানা গড়ে তুলতে জেলাশাসককে জমি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। সমবায় দপ্তর সোসাইটিকে রেজিস্ট্রেশনও দিয়েছে। 

    ডুয়ার্সের রুগ্‌ণ চা বাগানগুলির মধ্যে অন্যতম কালচিনির মধু। যখনতখন বন্ধ ও রুগ্ণ হওয়ার কারণে বাগানের মহিলাদের কাজের খোঁজে ভিনরাজ্যে ছুটতে হয়। সোসাইটিতে এখন সদস্য সংখ্যা ৯০ জন। কাজের সুবিধার্থে ১২ জন পুরুষ সদস্যকেও রাখা হয়েছে। আগে ডুয়ার্সে আদিবাসীদের পোশাক আসত ঝাড়খণ্ড ও অসম থেকে। এখন শিলিগুড়ি থেকে আদিবাসীদের পোশাক এনে ওল্ড হাসিমারার শোরুমে বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু শিলিগুড়ি থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ওই পোশাক। তাতে খুব বেশি লাভ থাকছে না।  তাই সোসাইটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় স্তরেই এই পোশাক তৈরি করা হবে। তার জন্য সোসাইটির ৬০ জন মহিলাকে সরকারিভাবেই সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। 

    সোসাইটির সম্পাদিকা কণিকা ধানোয়ার বলেন, ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি বাগান রুগ্ণ বা বন্ধ হলে পুরুষদের সঙ্গে মহিলা শ্রমিকরাও কাজের খোঁজে ভিনরাজ্যে পাড়ি দেন। ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে অনেক মহিলা শ্রমিক বেপাত্তাও হয়ে যান। সেই জন্যই আমরা মহিলাদের ভিনরাজ্যে যাওয়া আটকাতে এই সোসাইটি গড়ে তোলা হয়। 

    সোসাইটির চেয়ারম্যান বিনয় কেরকেট্টা বলেন, শুধু আদিবাসীই নয়। কারখানা হলে ডুয়ার্সের রাভা, মেচ, নেপালি ও গারো সহ অন্যান্য জনজাতি সম্প্রদায়ের পোশাকও তৈরি করবেন মহিলারা।
  • Link to this news (বর্তমান)