আদিবাসীরা বন্ধ প্রত্যাহার করলেও অশান্তি, পোড়ানো হল সরকারি বাস
বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, গঙ্গারামপুর: বংশীহারির ঘটনার পরিপেক্ষিতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বন্ধ প্রত্যাহারের পরেও আদিবাসী সমাজের নামে সরকারি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল। সোমবার ভোরে গঙ্গারামপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে কালনার উদ্দেশে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার একটি বাস ছাড়ে। ৫১২নং জাতীয় সড়কেও কোথাও আদিবাসী সমাজের বন্ধের কোনও পিকেটিং ছিল না। বংশীহারি থানা ও হরিরামপুর থানার সীমানা এলাকায় ৫১২নং জাতীয় সড়কের মেহেন্দিপাড়ায় ওই সরকারি বাসে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। তাদের হাতে ধারালো অস্ত্রশস্ত্র, ও আদিবাসী সমাজের প্ল্যাকার্ড ছিল। তারা মুখ ঢেকে রীতিমতো তাণ্ডব চালায়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বাসে। যদিও যাত্রীরা বাস থেকে নেমে প্রাণ বাঁচান। স্থানীয়রা বাসে আগুন দেখে ছুটে আসেন। আতঙ্কে পুরো বাস পরিষেবা বেশ কয়েক ঘণ্টা বন্ধ হয়ে যায়। দমকল ও বংশীহারি, হরিরামপুর থানার পুলিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার তরফে হরিরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। গঙ্গারামপুর মহকুমা পুলিস আধিকারিক দীপাঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, মেহেন্দিপাড়ায় সরকারি বাসে ভাঙচুর হয়েছে। আমরা তদন্তে নেমেছি, এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। বাস যাত্রী বা স্টাফদের কোনও ক্ষতি হয়নি।
সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় অন্যান্য দিনের মতো সমস্ত পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল। প্রথম দিকে আতঙ্কে বাস চলাচল থমকে গেলেও বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে আদিবাসী ইউনাইটেড ফোরাম বন্ধ প্রত্যাহারের পরেও আদিবাসী সমাজের ব্যানারে বন্ধের নামে সরকারি বাস ভাঙচুরের ঘটনা কারা ঘটাল। আদিবাসী সমাজের বেশকিছু সংগঠন ইউনাইটেড ফোরামের মধ্যে নেই। তবে কি সেই সংগঠনগুলি বন্ধের সমর্থনে রাস্তায় ছিল। এনিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস।
অল ইন্ডিয়া আদিবাসী ইউনাইটেড ফোরামের আহ্বায়ক মদন মুর্মু বলেন, আমাদের ফোরামের পক্ষ থেকে যে’টি সামাজিক সংগঠন আছে তারা বন্ধ প্রত্যাহার করছে। আমরা মাইকিংও করেছি। আদিবাসী সমাজের নাম ভাঙিয়ে যারা সরকারি বাসে আগুন দিয়েছে, তাদের পরিচয় তারা দুষ্কৃতী। সংগঠনের তরফে ঘটনার নিন্দা জানাই। পাশাপাশি দোষীদের চিহ্নিত করে পুলিস প্রশাসন আইনি পদক্ষেপ নিলে আমরা প্রশাসনের পাশে আছি। দুষ্কৃতীদের মুখ ঢাকা থাকায় স্থানীয়রা চিনতে পারেনি। পুলিস এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে দোষীদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করে দিয়েছে।