• আজ পেশ ‘অপরাজিতা’ বিল, ধর্ষণে ফাঁসিই, পরিচয় প্রকাশে পাঁচ বছর জেল
    বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘অপরাজিতা’—এই নামেই আসছে ধর্ষণে ফাঁসির সাজার বিল। আজ, মঙ্গলবার বিধানসভায় তা পেশ করে যুগান্তকারী পদক্ষেপ করতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বিলে কঠোরতম শাস্তির পাশাপাশি আরও দ্রুত বিচারের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। তদন্ত শেষ করার সময়সীমাও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। ২১ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। প্রয়োজনে মিলবে অতিরিক্ত ১৫ দিন। এমনকী দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের উল্লেখ রয়েছে বিলে। ইদানীং নির্যাতিতার ছবি থেকে ফেক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তা রুখতে রাজ্য সরকার কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে। নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ্যে আনার অপরাধে ৩ থেকে ৫ বছরের কারাবাস ও জরিমানা হবে।

    আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় দোষীর ফাঁসি চেয়ে মিছিল করেছিলেন মমতা। গত ২৮ আগস্ট দলের ছাত্র সংগঠনের কর্মসূচিতেই ঘোষণা করেন, ধর্ষণ বিরোধী বিল আনবে তাঁর সরকার। সেই ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে তা এনে দেখালেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। নাম, ‘দ্য অপরাজিতা উওম্যান অ্যান্ড চাইল্ড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল’জ অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৪’। সোমবার বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে বিধায়কদের মধ্যে বিলটি বিতরণ করা হয়। আজ সেটির উপর দু’ঘণ্টা আলোচনা হবে। আলোচনায় অংশ নিয়ে এই বিলের যথার্থতা তুলে ধরবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। 

    ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় রাজ্যের হাতে যে ক্ষমতা রয়েছে, তার উপর ভিত্তি করেই এই বিল এনেছে সরকার। তাতে মহিলা ও শিশুদের সুরক্ষার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিলে উল্লেখ আছে, ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণিত হলে শাস্তি আজীবন কারাবাস অথবা মৃত্যুদণ্ড এবং জরিমান। এটি জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এছাড়াও ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ড এবং জরিমানা হবে। গণধর্ষণের ঘটনায় জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে আজীবন কারাবাস অথবা মৃত্যুদণ্ড এবং জরিমানার শাস্তি হবে দোষীর। বিলে নাবালিকার বয়স উল্লেখ করে দোষীর শাস্তির বিধান আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অভিঘাত বুঝে ২০ বছর, এমনকী আমৃত্যু কারাবাসের সংস্থান রয়েছে সেখানে। এছাড়াও মৃত্যুদণ্ড এবং জরিমানা পর্যন্ত হতে পারে।

    অ্যাসিড হামলার ক্ষেত্রে আলাদা শাস্তির বিধান রয়েছে বিলে। সেক্ষেত্রে দোষ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তর আজীবন কারাবাস সঙ্গে জরিমানা হবে জামিন অযোগ্য ধারায়। এছাড়া ধর্ষণ বা এধরনের অপরাধের মামলার বিচার সংক্রান্ত তথ্য অনুমতি ছাড়া প্রকাশ্যে আনা হলে ৩ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা হতে পারে। মহিলাদের সুরক্ষায় রাজ্য সরকারের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল ‘অপরাজিতা টাস্ক ফোর্স’ গঠন। 
  • Link to this news (বর্তমান)