• সিলিংয়ের নীচে প্লাস্টিক টাঙিয়ে চলছে কাজ, হাওড়ার অধিকাংশ ডাকঘরই বেহাল
    বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সুদীপ্ত কুণ্ডু, হাওড়া: কোথাও ছাদ চুঁইয়ে বৃষ্টির জল পড়ছে, কোথাও আবার ইঁদুরের দাপাদাপি। হাওড়া শহরের অধিকাংশ পোস্ট অফিস ও সাব পোস্ট অফিসেই এই হাল। বহু পোস্ট অফিসে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থাও নেই। এমনই কঙ্কালসার চেহারা নিয়ে চলছে গ্রাহক পরিষেবা। যেখানে মানুষের লক্ষ লক্ষ টাকা ও সম্পত্তি সংরক্ষিত রয়েছে, সেখানে পরিকাঠামো উন্নয়নে ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন কেন্দ্র? এই প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছে গ্রাহকদের বড় অংশ।

    দক্ষিণবঙ্গ অঞ্চলের হাওড়া ডিভিশনে হেড পোস্ট অফিস রয়েছে দু’টি। সাব পোস্ট অফিস রয়েছে ৯২টি। ব্রাঞ্চ অফিসের সংখ্যা আড়াইশো। হাওড়া শহরের অধিকাংশ সাব পোস্ট অফিসের অবস্থা বর্তমানে চূড়ান্ত বেহাল। জানা গিয়েছে, বহু ডাকঘরের নিজস্ব ভবন না থাকায় শহরের বিভিন্ন পুরনো বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলছে গ্রাহক পরিষেবার কাজ। শতাধিক বছরের পুরনো বাড়িগুলিতে চলা সেইসব ডাকঘর বাস্তবে ভুতুড়ে বাড়ির চেহারা নিয়েছে। স্যাঁতস্যাঁতে অফিস ঘরের ভিতর টিমটিমে আলোয় কোনওমতে কাজ করছেন পোস্টমাস্টার ও অন্যান্য কর্মীরা। এদিন দুপুরে সার্কুলার রোড উপ ডাকঘরে গিয়ে দেখা গেল, অফিস ঘরের সিলিংয়ের নীচে প্লাস্টিকের চাদর টাঙিয়ে কাজ করছেন পোস্টমাস্টার। তাঁদের কথায়, সামান্য বৃষ্টি হলেই জল পড়ে ভিতরে। শুধু তাই নয়, নিকাশিনালা উপচে জমা জল ঢুকে পড়ে অফিসে। তখন নথিপত্র আলমারির উপর তুলে রাখতে হয়। তখন চেয়ার ছেড়ে টেবিলের উপর উঠে বসে গ্রাহকদের পরিষেবা দেন কর্মীরা। 

    বেহাল দশা বামনগাছি পোস্ট অফিস, সালকিয়ার জাগৃতি সাব পোস্ট অফিস, ডস টেম্পল পোস্ট অফিস, বালি সাব পোস্ট অফিস, চক্রবেড়িয়া সাব পোস্ট অফিসের। বড় বড় ইঁদুরের দাপটে গ্রাহকদের নথিপত্র রক্ষা করাই এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে কর্মীদের। দেখা গিয়েছে, অধিকাংশ সাব পোস্ট অফিসেই অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। ফলে কোনওভাবে আগুন লাগলে সমস্ত দরকারি কাগজপত্র নিমেষে ভস্মীভূত হয়ে যেতে পারে। ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের অনেকেই বলছেন, ‘শহরের ডাকঘরগুলি এখন কোনওভাবেই নিরাপদ নয়। বেহাল অফিস সংস্কারের ব্যাপারে হেলদোল নেই কেন্দ্রীয় সরকারের’। বিষয়টি নিয়ে পোস্টমাস্টার জেনারেল (দক্ষিণবঙ্গ আঞ্চলিক) সুপ্রিয় ঘোষকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘সাব পোস্ট অফিসগুলির বেহাল দশা আমাদের নজরে এসেছে। যে ভবনগুলি আমাদের নিজস্ব, সেগুলি সংস্কার করা হবে। যেগুলি ভাড়া নিয়ে চলছে, সব বাড়ির মালিকদের সংস্কারের জন্য অনুরোধ করা হবে’। 
  • Link to this news (বর্তমান)