• ভুল করে এজেসি বোস রোড ফ্লাইওভারের উল্টো ফ্ল্যাঙ্কে, দুই গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ, জখম ১০
    বর্তমান | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আচমকা মাঝ ফ্লাইওভারে তীব্র হর্ন। তারপরই বিকট শব্দ।  তা শুনেই নিমেষে থেমে যায় ফ্লাইওভারের পাশের লেনের সব গাড়ি। দু’টি এসইউভি গাড়ির মুখোমুখি ধাক্কা। দুমড়ে মুচড়ে যায় দু’টি গাড়িই। ফ্লাইওভারের ছড়িয়ে পড়ে গাড়ির তেল, যন্ত্রাংশ। দু’টি গাড়ির ভিতর থেকেই তখন আর্তনাদ, কান্নার রোল। সোমবারের সকালে পার্কসার্কাসগামী এজেসি বোস ফ্লাইওভারে ভয়াবহ দুর্ঘটনার ঘটল। ফ্লাইওভারের একই ফ্ল্যাঙ্কে মুখোমুখি দু’টি গাড়ির সংঘর্ষে জখম হলেন ১০ জন যাত্রী। তাঁদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

    আহতদের পুলিস উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করেছে। গাড়ি দু’টিকে আটক করেছে কড়েয়া থানার পুলিস। কীভাবে ডাউন ফ্ল্যাঙ্ক ধরে উঠে এল গাড়ি? কীভাবে ট্রাফিক বিধিলঙ্ঘন? কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিস কোথায় ছিলেন? দুর্ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে। তারই উত্তর খুঁজতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখছে লালবাজার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এদিন সকাল ছ’টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে বেকবাগানের কাছে এজেসি বোস ফ্লাইওভারের উপরে। পিটিএসের দিক থেকে যাত্রীবোঝাই একটি টাটা সুমো সল্টলেকের দিকে যাচ্ছিল। তাতে ছিলেন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা। তাঁরা অফিস যাচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। 

    বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের কাছেই সংশ্লিষ্ট সুমোর চালক দেখতে পান, ওই ফ্ল্যাঙ্ক দিয়েই ছুটে আসছে লাল রঙের এসইউভি গাড়ি নেক্সন। পুলিসকে প্রাথমিকভাবে সুমো গাড়ির আহত চালক জানিয়েছেন, উল্টোদিক থেকে আসা গাড়িটিকে দেখে ক্রমাগত হর্ন দিতে থাকেন। একাধিকবার গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে সতর্ক করারও চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু, তাতেও গতি কমেনি নেক্সনের। এজেসি বোস ফ্লাইওভারের প্রতিটি ফ্ল্যাঙ্কে দু’টি করে লেন রয়েছে। সেক্ষেত্রে দু’টি গাড়ির মুখোমুখি ধাক্কা যাতে না লাগে সেজন্য সুমো গাড়িটি পাশ কাটানোর চেষ্টা করে। কিন্তু, তাতেও লাভ হয়নি। সরাসরি এসে সেই গাড়িতেই সজোরে ধাক্কা মারে নেক্সন। নিয়ম লঙ্ঘনকারী এই গাড়ির চালক মদ্যপ ছিলেন কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একইসঙ্গে পার্ক সার্কাস ক্রসিংয়ে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিস সেই সময় কোথায় ছিলেন? তাঁরা বিষয়টি দেখলেন না কেন? তাও খতিয়ে দেখছে লালবাজার। 

    দু’টি গাড়িরই বনেট, ইঞ্জিন, উইন্ড স্ক্রিন, সামনের দু’টি দরজা, দু’টি  জানলা ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নেক্সনের এয়ারব্যাগ খুলে যাওয়ায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন চালক ও তার পাশে থাকা ব্যক্তি। সুমো গাড়িটিতে ৬ জন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী ছিলেন বলে লালবাজার সূত্রে খবর। অন্যদিকে, নেক্সনে ছিলেন ৪ জন। তাঁরা বন্ধু বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই সেখানে পৌঁছয় সাউথ ট্রাফিক গার্ড, ইস্ট ট্রাফিক গার্ড ও কড়েয়া থানার পুলিস। দুর্ঘটনাগ্রস্তদের দু’টি গাড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কলকাতা পুলিসের অ্যাম্বুলেন্সে করে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ট্রমা কেয়ার সেন্টারে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। এই দুর্ঘটনার জেরে এজেসি বোস ফ্লাইওভারের পার্কসার্কাসগামী ফ্ল্যাঙ্কটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। সাতসকালের ঘটনা হলেও এর জেরে আংশিক যানজট হয়। সকাল সাতটার মধ্যেই দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দু’টিকে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিস। 
  • Link to this news (বর্তমান)