নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত ও সংবাদদাতা, বসিরহাট: নাবালিকাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে প্রৌঢ় এক গৃহশিক্ষককে ইলেকট্রিক পোস্টে বেঁধে বেধড়ক গণপিটুনি চলল। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসল পুলিস। যৌন হেনস্তায় অভিযুক্ত দীনেশ বৈদ্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। পাশাপাশি গণপিটুনিতে অভিযুক্ত ভোলা মণ্ডলকেও পুলিস গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি হিঙ্গলগঞ্জ থানার গোবিন্দকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিরবাঁধ এলাকার।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, হিঙ্গলগঞ্জের যোগেশগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা দীনেশ বৈদ্য। তার ছেলে হিঙ্গলগঞ্জ থানার সিভিক ভলান্টিয়ার। দীনেশ পেশায় একজন গৃহশিক্ষক। কয়েকদিন আগে পাশের পাড়ার এক নাবালিকাকে পানীয় জল দিতে বলে। সাতপাঁচ না ভেবে নাবালিকা দীনেশকে জল দেয়। আর এরপরেই ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে সে নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার কেটে যায় কয়েকটা দিন। হঠাৎ করে শনিবার দীনেশকে ওই এলাকায় দেখতে পান ওই নাবালিকার পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা। এরপরই তাকে ঘিরে ধরে চলে বিক্ষোভ। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। উত্তেজিত জনতা দীনেশকে ইলেকট্রিক পোস্টে বেঁধে রেখে গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিস গিয়ে ঘটনাস্থল থেকে দীনেশকে উদ্ধার করে। স্থানীয়রা সেই মারধরের ভিডিও ক্যামেরাবন্দি করেন। পরে সোমবার সকাল থেকে সেই ভিডিও ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয় (ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি বর্তমান)। বিষয়টি নজরে আসতেই নড়েচড়ে বসে বসিরহাট জেলা পুলিস। পুলিস সুপারের কড়া নির্দেশে গোটা ঘটনাটির তদন্ত শুরু করে হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিস। সোমবার রাতে দীনেশের পরিবার ও নাবালিকার পরিবারের তরফে পৃথকভাবে অভিযোগ দায়ের হয়। যৌন নির্যাতনের অভিযোগে দীনেশ বৈদ্য ও গণপিটুনিতে অভিযুক্ত ভোলা মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিস। আজ, মঙ্গলবার তাদের বসিরহাট আদালতে পাঠাবে পুলিস।
এ বিষয়ে বসিরহাট পুলিস জেলার পুলিস সুপার হোসেন মেহেদি রহমান বলেন, আমাদের কাছে সম্পূর্ণ বিষয়টি অজানা ছিল। সোমবার বিষয়টি জানতেই দু’পক্ষকে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়। পৃথক দু’টি অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।