টাকা প্রস্তুত। অনুমোদনের সরকারি কাজও সম্পূর্ণ। কিন্তু সূত্রের দাবি, হাতে থাকা পুজো অনুদানের টাকা বিতরণে তাড়াহুড়ো করতে চাইছে না নবান্ন।
গত ২৩ জুলাই নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে পুজো অনুদান বৃদ্ধির ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিন দশেক আগেই ক্লাব-পুজো কমিটিগুলির জন্য দুর্গাপুজোর অনুদানের চূড়ান্ত প্রশাসনিক প্রস্তুতিতে ছাড়পত্র দিয়েছে নবান্ন। ৪৫ হাজারের কিছু বেশি ক্লাবের জন্য বরাদ্দও হয়েছে ৩৮৫ কোটি ৩৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু জেলা প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, অন্তত ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেই টাকা না ছাড়ার ব্যাপারে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশ এসেছে। তার পরেও কবে ছাড়া হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে, পুজো অনুদান বিলির দায়িত্ব থাকে প্রধানত পুলিশের উপরেই। তাই জেলা পুলিশ কর্তৃপক্ষের কাছে ওই ‘বিশেষ নির্দেশ’ পৌঁছে গিয়েছে।
প্রশাসনিক বিশ্লেষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আর জি করের ঘটনাকে ঘিরে দীর্ঘ আন্দোলন ও তাতে সমাজের সব অংশের যোগদান সরকারের স্নায়ুর চাপ অনেকটাই বাড়িয়েছে। তার উপরে কয়েকটি পুজো কমিটি ‘প্রতিবাদে’ ইতিমধ্যেই সেই অনুদান প্রত্যাখ্যান করার কথা ঘোষণা করেছে। এখনই অনুদান দেওয়া শুরু হলে ও তার পরে প্রত্যাখ্যানের তালিকা দীর্ঘ হলে তা প্রশাসনের পক্ষে বিড়ম্বনার হবে।
সরকারি আদেশনামা অনুযায়ী, গোটা রাজ্যে ৪৫ হাজার ৩৩৬টি ক্লাব-পুজো কমিটি রয়েছে। রাজ্য পুলিশের আওতায় রয়েছে ৪২ হাজার ৩৩৬টি ক্লাব-কমিটি। সেই জন্য ৩৫৯ কোটি ৮৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা কোষাগার থেকে তোলার অধিকার দেওয়া হয়েছে রাজ্য পুলিশকে। জেলায় জেলায় সেই কাজ করবেন পুলিশ সুপার বা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনও পুলিশ আধিকারিক। আবার কলকাতা পুলিশের অধীনে রয়েছে তিন হাজার পুজো। সেই কারণে কলকাতা পুলিশকে ২৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা এই খাতে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে নবান্ন। সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার পরিবর্তে ‘অ্যাকাউন্ট পেয়ি’ চেকের মাধ্যমে পুজো উদ্যোক্তা ক্লাব-কমিটিগুলিকে অনুদান দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতর। নবান্নের দাবি, এই পদক্ষেপ অর্থ দফতরের অনুমতি নিয়েই। তবে সবই হবে পরিস্থিতি বুঝে।