রাজ্য জুড়ে সাধারণ নাগরিক যে ভাবে আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমেছেন, তা-ই এখন চর্চার কেন্দ্রে। এই আন্দোলন অরাজনৈতিক ভাবেই এগিয়ে যাবে, কোনও রাজনৈতিক দল তার ফায়দা নিতে পারবে কি না, উঠে আসছে সেই প্রশ্নও। এই পরিস্থিতিতে ‘সময়’ই এখন গণ-আন্দোলনের নেতা বলে মন্তব্য করলেন সিপিএমের যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।
নির্যাতিতার শববাহী গাড়ি আটকে আর জি কর-কাণ্ডকে প্রথম প্রকাশ্যে আনতে বড় ভূমিকা ছিল মীনাক্ষীদেরই। ঘটনার প্রায় মাস ঘুরতে চলার মুখে দাঁড়িয়ে ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী বলেছেন, ‘‘এই গণ-আন্দোলনের নেতা সময়। এই চলমান আন্দোলনের নেতা প্রত্যেক আন্দোলনকারী, নির্দিষ্ট কেউ নয়। তিলোত্তমার বিচারের জন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে হাতে হাত ধরে শেষ পর্যন্ত লড়ে যেতে হবে।’’ প্রসঙ্গত, ‘আমরা তিলোত্তমা’র ডাকে রবিবার রাতে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে নাগরিক প্রতিবাদের সময়ে দূরে দাঁড়িয়েছিলেন মীনাক্ষী। দূর থেকেই আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ছেন তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলি অবশ্য তাদের মতো করে প্রতিবাদ কর্মসূচি অহব্যাহত রেখেছে। রাজাবাজার থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত আজ, মঙ্গলবার ‘মহামিছিলে’র ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট। সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর মামলার শুনানি রয়েছে ৫ সেপ্টেম্বর। তার আগের দিন, ৪ তারিখ ‘সেটিং ছেড়ে বিচার দাও, নইলে সিবিআই ফিরে যাও’— এই স্লোগান সামনে রেখে নিজ়াম প্যালেস অভিযানের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। এর আগে কলকাতার নগরপালের অপসারণ চেয়ে লালবাজার অভিযান করেছিল তারা। সিবিআই-কে ‘হুঁশিয়ারি’ দিতে নিজ়াম প্যালেস অভিযানের প্রসঙ্গে উদ্যোক্তাদের কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী, পুর-প্রতিনিধি সন্তোষ পাঠকের বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেসের নেতাদের সিবিআই মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে নিয়ে যাচ্ছে । অন্য বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীরা জেল খাটছেন। কিন্তু সব প্রমাণ হাতে পেয়েও সিবিআই তৃণমূলের নেতৃত্বের সম্পর্কে অদ্ভুত ধরনের নিশ্চুপ!’’
আর জি কর-কাণ্ডকে সামনে রেখে বিচার এবং গণ-স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে দুর্নীতিমুক্ত করার দাবিতে সোমবারও নাগরিক মিছিল হয়েছে শহরে। এন্টালির রামলীলা পার্ক থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলের ডাক দেওয়া হলেও এস এন ব্যানার্জি রোডে এলিট সিনেমার কাছে আন্দোলনকারীদের আটকে দিয়েছিল পুলিশ। তার পরে সেখানেই দু’ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, বিনায়ক সেন, মেরুনা মুর্মু, মীরাতুন নাহার, পার্থ ঘোষ-সহ সমাজের নানা ক্ষেত্রের বিশিষ্টেরা। ছিলেন নারী, ট্রান্স কুইয়ার, মানবাধিকার আন্দোলনের নেতৃত্বও।