সুব্রত বিশ্বাস: পুজোর মুখেই কি দূরপাল্লা ট্রেনের ‘চাক্কা জ্যাম’? তেমনই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অল ইন্ডিয়া গার্ড কাউন্সিল আগামী ১১ সেপ্টেম্বর দেশজুড়ে ধরনার ডাক দিয়েছে। রেল তাদের দাবি না মানলে ধর্মঘটের পথে যেতে পারেন গার্ডরা, এমনই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে গার্ড কাউন্সিলের পক্ষ থেকে।
অভিযোগ, লোকাল ট্রেনের মতো দূরপাল্লা ট্রেনের থেকে তাদের ব্যবহৃত ‘লাইন বক্স’ এবার তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। এই বাক্সে থাকে গার্ডদের নিজস্ব জিনিসপত্র ও ট্রেন চালানোর মতো একাধিক সরঞ্জাম। যার মধ্যে তেরঙ্গা ট্রেন ল্যাম্প, যন্ত্রপাতি ও বিস্ফোরক ডিটোনেটর। রেল এই লাইনবাক্স তুলে ট্রলি ব্যাগ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পূর্ব রেলের অপারেশন বিভাগ আগামী ৬ সেপ্টেম্বর হাওড়া, শিয়ালদহ, মালদহে এই নির্দেশ কার্যকর করতে বলেছে। অর্থাৎ দূরপাল্লা ট্রেনে চালক ও গার্ডের কামরায় এই বাক্স থাকবে না।
এনিয়ে মঙ্গলবার ফেয়ারলি প্লেসে অপারেশন আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। পাশাপাশি নির্দেশ বাতিল করার জন্যও দাবি তুলবে এদিন। গার্ড কাউন্সিল অভিযোগ তুলেছে, লাইন বাক্স তুলে দিলে ব্যাগে রেলের সব সরঞ্জাম ডিটোনেটর নিয়ে তারা ঘুরবেন। এমনকী বাড়ি যাবেন। তারা স্পষ্ট করেছেন, বাক্সে যে রেলের সরঞ্জাম থাকে, তা রেলের তত্বাবধানে থাকবে। তাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নিয়ে তারা ট্রলি ব্যাগ ব্যবহার করতে আগ্রহী আছে। রেল যদি এই প্রস্তাব না মানে তবে ধরনার দিকে যাওয়ার মতো ইঙ্গিত দিয়েছেন তারা।
লোকাল ট্রেনে গার্ড বক্স তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রেল। প্রতিবাদে ২০১৮ সালের ১০ মার্চ ৬ ঘণ্টার কর্মবিরতিতে হাওড়া, শিয়ালদহের সব লোকাল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। রেলে ধর্মঘটের (Strike) চেহারা নিয়েছিল। প্রচুর মানুষ হয়রান হয়েছিলেন। এর পরই রেল গার্ড ও চালকের কামরায় ‘ইনবিল্ট বাক্স’ তৈরি করে। যাতে রেলের সামগ্রী থাকে। আর গার্ডরা নিজেদের সামগ্রী ব্যাগে নিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। পূর্ব রেলের গার্ড কাউন্সিল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১ সেপ্টেম্বর দেশজুড়ে বড় স্টেশনগুলিতে ধরনায় বসবেন গার্ডরা। এর পরও যদি সিদ্ধান্ত বদল না করে রেল, তবে পুজোর আগেই ধর্মঘটের দিকে যাবেন তাঁরা। তবে এবার এই বন্ধে আটকে পড়তে পারে দূরপাল্লার ট্রেন।