এই সময়, আসানসোল: স্কুলজীবনের তিন বছর আসানসোলে মামাবাড়িতে কেটেছিল আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের। সোমবার সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। মঙ্গলবার দুপুরে মহিশিলা কলোনির চক্রবর্তী মোড়ের কাছে সন্দীপের মামাবাড়িতে তাঁকে নিয়ে বেশি শব্দ খরচ করতে রাজি ছিলেন না তাঁর মামি রঞ্জনা সরকার। জানালেন, সন্দীপের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগাযোগ নেই। মামা বাপি সরকার ক্যান্সার আক্রান্ত। তাঁর কেমোথেরাপি চলছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে।আসানসোলে জিটি রোডের ধারে রামকৃষ্ণ মিশনের যে পুরোনো স্কুলটি রয়েছে সেখানেই পড়তেন সন্দীপ। ক্লাস এইটে ভর্তি হয়েছিলেন। এ দিন মহিশিলা কলোনিতে সন্দীপের মামাবাড়িতে কেউ সামনে এসে কথা বলতে রাজি ছিলেন না।
উপরের ঘরের জানলা থেকে মুখ বাড়িয়ে সন্দীপের মামি বলেন, 'আমাদের সঙ্গে সন্দীপের এখন কোনও যোগাযোগ নেই। ৭-৮ বছর আগে শেষ আমার মেয়ের বিয়েতে এসেছিল। তার পর থেকে যোগযোগ ছিল না।' এর পর একরাশ বিরক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, 'আমার স্বামী খুবই অসুস্থ। অপারেশন হয়েছে। তিনি কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। অযথা কেন এখনে আসছেন আপনারা!'
আসানসোলের রামকৃষ্ণ মিশন স্কুল থেকে ১৯৮৭ সালে মাধ্যমিক পাস করেন সন্দীপ। এই স্কুলেরই প্রাক্তন শিক্ষক বিদ্যুৎ দাসের কাছে প্রাইভেট পড়তেন সন্দীপ। অশীতিপর সেই শিক্ষক বলেন, 'সে তখন অত্যন্ত শান্ত ছিল। খুব কম কথা বলত। ওর মামা মহিশিলা কলোনি থেকে সাইকেলে আমার কাছে পড়তে নিয়ে আসতেন। সেই ছেলেটা কী করে এমন হয়ে গেল বুঝে উঠতে পারি না।'
সন্দীপের এক ব্যাচমেটের কথায়, 'ও ক্লাসে প্রথম ৫ জনের মধ্যে থাকত।' আসানসোল থেকে বনগাঁয় ফিরে গিয়ে বনগাঁ হাইস্কুল থেকে ১৯৮৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন সন্দীপ। সিবিআই তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে বনগাঁ হাইস্কুলের মেধাতালিকার বোর্ড থেকে সন্দীপের নাম বাদ দেওয়ার দাবি করছিলেন সন্দীপের সমসাময়িক তথা শিক্ষক পার্থ দে। সন্দীপের গ্রেপ্তারির পর তাঁর নাম কি বাদ দেওয়া হবে? সেটাই এখন দেখার।