বদনামের ভয়ে দ্রুত বিয়ে, নবদ্বীপে আত্মহত্যা নাবালিকার
এই সময় | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
এই সময়, কৃষ্ণনগর: একাদশ শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিল দশম শ্রেণির এক নাবালিকা। নদিয়ার নবদ্বীপ থানা এলাকার একই গ্রামে দু’জনের বাড়ি হওয়ায় স্কুলে যাওয়া থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়া এমনকী একই সঙ্গে তাদের রাত কাটানো নিয়ে আপত্তি তুলেছিল পরিবার। নিষেধ না শুনে আরও বেশি করে মেলামেশা শুরু করে দু’জনে। এই নিয়ে গ্রামের লোকজনের কানাঘুষোয় চিন্তায় পড়ে পরিবার।পেশায় কৃষিজীবী ভীমপুর থানা এলাকার এক যুবকের সঙ্গে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দেন তাঁরা। তিন সপ্তাহ আগে মেয়েকে পাত্রস্থ করতে পেরে খানিকটা স্বস্তিতে ছিলেন পেশায় টোটোচালক বাবা। মঙ্গলবার সকালে অবশ্য তাঁর ভুল ভাঙে। নবদ্বীপের অন্য এক গ্রামে মামা বাড়ি থেকে নাবালিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, রবিবার ভীমপুরে শ্বশুরবাড়ি থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে ওই বাড়িতে একাই এসেছিল সে। বুধবার ফেরার কথা ছিল। রাতে সকলের সঙ্গে গল্প করে দোতলার একটি ঘরে ঘুমোতে যায় সে। সকালে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
নাবালিকার বাবা বলেন, ‘বিয়ের পরে মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে আমার বাড়িতে না এসে সোজা ওর মামা বাড়িতে উঠেছিল। বাড়িতে আসতে বললে মেয়ে বলেছিল, বুধবার শ্বশুরবাড়ি চলে যাবে। তাই পরে আসবে। মঙ্গলবার সকালে প্রথমে খবর পাই, মেয়েকে পাওয়া যাচ্ছে না। মেয়ে কোথাও পালিয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় আমার বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ওর মামা বাড়িতে অন্য রাস্তা দিয়ে শর্টকাটে পৌঁছে যাই। যাতে কোথাও পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে মেয়েকে রাস্তা থেকেই ফেরাতে পারি। পরে জানতে পারি ও আত্মহত্যা করেছে।’
এক প্রতিবেশী বলেন, ‘মেয়েটি ওর এক বান্ধবীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিল। দু’জনের ভালোবাসা নিয়ে গ্রামের মানুষ দু’এক কথা বলতে শুরু করলে মেয়ের বিয়ে কী করে দেবেন এই চিন্তায় ওর বাবা দ্রুত পাত্র খুঁজতে শুরু করেন। মাত্র কুড়ি দিন আগে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু সেই মেয়েকেই চিরতরে হারাতে হলো।’
আঠারো না হতেই মেয়ের বিয়ে দেওয়া ঠিক হয়নি এমন কথা গ্রামের লোকজন বললেও মেয়ের বাপের বাড়ির লোকজনের কান্না দেখে তাঁরা আর এ নিয়ে মুখ খোলেননি। নবদ্বীপ থানার পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, ঠিক কী কারণে আত্মহত্যা তদন্ত করা হচ্ছে। দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে।