• পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা ব্যয়ে প্রথম নদীয়া
    বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: জেলাশাসকের ধমকেই কাজ হাসিল। মাত্র দু’মাসের ব্যবধানেই লাস্ট বয় থেকে থেকে ফার্স্ট বয়। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচের নিরিখে বর্তমানে রাজ্যের মধ্যে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে নদীয়া জেলা। জুলাই মাসের শুরুতে ১৯ নম্বর স্থানে ছিল এই জেলার। পাশাপাশি দৈনিক টাকা খরচের নিরিখেও অনেক জেলাগুলোকে পিছনে ফেলে দিয়েছে নদীয়া। বর্তমানে গড়ে প্রতিদিন ৭ কোটি ৭৮ লক্ষ টাকা করে খরচ করা হচ্ছে। গত সোমবার এই নিয়ে নবান্নর তরফ থেকে জেলাগুলির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাতেই দেখা গিয়েছে কোচবিহারকে টপকে তালিকায় সবার উপরে রয়েছে নদীয়া জেলা। বর্তমানে দ্বিতীয় স্থানে থাকে কোচবিহার, নদীয়ার ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে। তাই প্রথম স্থান ধরে রাখতে নদীয়া জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে কাজের গতি আরও ত্বরাণ্বিত করা হচ্ছে। 

    নদীয়ার জেলাশাসক অরুণ প্রসাদ বলেন, ‘ছোট ছোট টার্গেট ধরে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিয়মিত পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে মিটিং করা হয়েছে। সেখানে তাদের বলা হয়েছিল দ্রুত কাজ করার। সেইমতো গোটা জেলাতেই কাজের গতি বেড়েছে বিগত কয়েক সপ্তাহে।’

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলার কাছে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ স্তরে সবমিলিয়ে ১৯৫ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা রয়েছে। যার মধ্যে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৩৭ কোটি ৬ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। অর্থাৎ ৭০ শতাংশ টাকা বিগত দু’মাসে খরচ করা গিয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কোচবিহার জেলা ৬৯ শতাংশ টাকা খরচ করেছে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলা। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৬৫ শতাংশ টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়াও চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে পশ্চিম মেদিনীপুর ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। 

    লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বেরনোর পর থেকেই জেলাভিত্তিক, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের পুরনো অর্থবর্ষের টাকা দ্রুত খরচের ব্যাপারে জোর দেওয়া হয় নবান্নের তরফ থেকে। কারণ তাতে দেখা যায়, জেলাগুলিতে কয়েকশো কোটি টাকা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ, এই তিন স্তরের অবস্থাই শোচনীয় ছিল। তখন নদীয়া জেলা ছিল একদম শেষের সারিতে। 

    তারপর থেকেই নিয়মিত গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদকে নিয়ে বৈঠক করা হয় জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে। জেলাশাসকের তরফ থেকে দ্রুত টাকা খরচের ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়। প্রতি সপ্তাহে কোন ব্লককে কত টাকা খরচ করতে হবে, তার টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়। সেইমতো ওই ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত উন্নয়নমূলক কাজে জোর দেয়। কোনও ব্লক সাপ্তাহিক টাকা খরচের লক্ষ্যমাত্রায় পোঁছতে না পারলে পরের বৈঠকে তার জবাব দিতে হয়। এমনকী বিগত কয়েক সপ্তাহে বৈঠকে জেলাশাসকের ধমকও খেতে হয়েছে ব্লকগুলোকে। উন্নয়নমূলক কাজের পাশাপাশি গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও সরকারি দপ্তরের বিদ্যুৎ বিলের খরচ মেটানোর জন্যও পঞ্চায়েত অর্থ কমিশনের বিগত অর্থবর্ষগুলোতে পড়ে থাকা টাকা ব্যবহার করতে বলা হয়।

    জানা গিয়েছে,গোটা রাজ্যে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকা ৩ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা রয়েছে। যার মধ্যে ১৮০৬ কোটা টাকা খরচ হয়েছে। অর্থাৎ ৫৪ টাকা খরচ হয়েছে। ‌মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, বাঁকুড়া জেলার পুওর পারফরম্যান্সের তালিকায় রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)