• ব্যান্ডেল গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য রুখে দিল পুলিস বাহিনী
    বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: আগেভাগে সজাগ হওয়াতেই এবার মিলল সাফল্য।  তারাপীঠে কৌশিকী অমাবস্যার ভিড়ে ব্যান্ডেল গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য রুখল পুলিস। ছিনতাই, চুরির চেষ্টা ও বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে শতাধিক জনকে পুলিস আটক করে। তবে গতবারের তুলনায় সেই সংখ্যাটা অনেকটাই কম। পুলিস জানিয়েছে, কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের বেলবন্ডে ছেড়ে দেওয়া হয়। 

    ফিবছর কৌশিকী অমাবস্যা তিথিতে তারাপীঠে ব্যাপক ভক্ত সমাগম হয়। তিথি শুরুর আগে থেকেই দূর-দূরান্তের সাধুসন্ত, পর্যটকরা ভিড় জমাতে শুরু করেন এই সাধন ক্ষেত্রে। প্রতিবছর ভিড়ের সুযোগে হাতসাফাই করতে এই জেলার পাশাপাশি ভিন জেলার চোর, ছিনতাইবাজদের ঠিকানা হয়ে ওঠে তীর্থভূমি তারাপীঠ। গতবার তাতে যুক্ত হয়েছিল ব্যান্ডেল গ্যাংয়ের মহিলা সদস্যরা। ভগবানের দুয়ারে ভক্ত সেজে একেবারে ফিল্মি কায়দায় নিখুঁত অপারেশন চালায় তারা। ভিড়ের মাঝে পুণ্যার্থীদের গলা থেকে হার ছিনতাইয়ের পাশাপাশি পকেট থেকে মানিব্যাগ, মোবাইল ফোন বের করে নেয় তারা। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে গতবার ব্যান্ডেল গ্যাংয়ের ২৩ জন মহিলা সদস্যকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। পরে লালবাজার থেকে পুলিস এসে তাদের নিয়ে যায়। ধৃত ১৬ জন লালবাজারের মোস্ট ওয়ান্টেড ছিল। মূলত তারা ভিড়কে টার্গেট করেই হাত সাফাইয়ে নামে। এবারও ব্যান্ডেল গ্যাংয়ের হানার আশঙ্কা থেকে পুলিসি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সিভিক ও পুলিস মিলিয়ে তিন হাজার জনকে মোতায়েন করা হয়। যাদের মধ্যে দক্ষ ৩০০ পুলিস অফিসার ছিলেন। সেই সঙ্গে ১৩টি অ্যান্টি ক্রাইম টিম ও ২০০টি সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে নজরদারি চালানো হয়। দফায় দফায় তারাপীঠের রাস্তায় ওড়ানো হয় ড্রোন ক্যামেরা। ২১টি পুলিস সহায়তা বুথ ছিল। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যটকদের ভিড়ের মাঝে সাদা পোশাকের পুলিস ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার রাত থেকেই রামপুরহাটের মনসুবা মোড় থেকে গোটা তারাপীঠকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলেছিল পুলিস। নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর পুলিস মোতায়েন করা হয়েছিল। আগেভাগে সতর্ক হওয়ার সাফল্যও মিলেছে। পুলিসি নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে এবার ব্যান্ডেল গ্যাং ময়দানেই নামেনি বলে পুলিসের দাবি। তাদের দৌরাত্ম্য রুখে দিতে সফল হয়েছে পুলিস। তবে কেপমারি, চুরি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটেছে। যদিও তা গতবারের থেকে কম। গতবার এমন প্রায় দেড়শো জনকে ধরেছিল পুলিস। এবার অবশ্য সংখ্যা কমে প্রায় একশো হয়েছে।

    উল্লেখ্য, দ্বারকা নদের ব্রিজের এক পাড়ে রামপুরহাট ও অন্য পাড় তারাপীঠ থানার অর্ন্তগত। পুলিস জানিয়েছে, দুটি থানা মিলিয়ে প্রায় ১০০ জনকে ধরা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে কয়েকজন কাটোয়ার। সকলেই তারাপীঠের রাস্তা, পুজো দেওয়ার লাইনে কেপমারি, ছিনতাই ও বিশৃঙ্খলা করতে গিয়ে ধরা পড়েছে। অধিকাংশকে বেল বন্ডে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। 

    পুলিসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এবার সিসি ক্যামেরায় নজরদারিতে জোর দেওয়া হয়েছিল। কারণ, গোটা তারাপীঠে উন্নত মানের সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছিল। সেই ক্যামেরা দেখে সাদা পোশাকের পুলিসের কাছে খবর পাঠিয়ে অভিযুক্তদের ধরা হয়েছে। কোথাও সাদা পোশাকের পুলিস নিজেরাই ধরেছে। 

    রামপুরহাট মহকুমা পুলিস আধিকারিক গোবিন্দ সিকদার বলেন, কেপমারি, চুরির করার সময় কয়েকজনকে ধরা হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবেই কৌশিকী অমাবস্যা তিথি কেটেছে। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করায় এই সাফল্য এসেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)