• গোঘাটে নাবালিকা ধর্ষণে যুবকের যাবজ্জীবন সাজা
    বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: আর জি কর নিয়ে রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদের মাঝেই নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে গোঘাটের যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আরামবাগের বিশেষ পকসো আদালত। মঙ্গলবার বিচারক কিসেন কুমার আগরওয়ালের এজলাসে এই রায় ঘোষণা হয়। তিন বছরের মাথায় বিচার পেল নির্যাতিতার পরিবার। আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে নির্যাতিতার এক আত্মীয়া আর জি করের চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় বিচার চেয়েও সওয়াল করেন। তিনি বলেন, আমাদের মেয়ের মতো ঘটনা যেন কারও সঙ্গে না হয়। তবে আইনের প্রতি আমার আস্থা ছিল। তাই আইনের মাধ্যমে দোষী উপযুক্ত সাজা পাওয়ায় আমরা খুশি। একইভাবে আর জি কর কাণ্ডেও দোষীদের খুঁজে বের করে দ্রুত সাজা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। 

    সরকারি আইনজীবী বিকাশ রায় বলেন, সবদিক বিচার করে দোষী সানাউল্লা খান ওরফে রমজানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। এছাড়া তার ১০হাজার টাকা জরিমানা হয়েছে। জরিমানার অর্থ নির্যাতিতার পরিবার পাবে। একইসঙ্গে আরও তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন বিচারক।

    আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, দোষী রমজান গোঘাটের সুন্দরপুর বকুলতলার বাসিন্দা। সে নির্যাতিতার দূর সম্পর্কের আত্মীয়। পেশায় রাজমিস্ত্রি রমজান আত্মীয়তার সূত্রেই নির্যাতিতার বাড়িতে থাকাকালীন তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তৎকালীন মাদ্রাসায় পাঠরতা নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীর উপর যৌন নির্যাতন চালায় সে। এই ঘটনার জেরে নাবালিকার মা  ২০২১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আরামবাগ থানায় রমজানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিস অভিযোগের পরই বছর ছাব্বিশের বিবাহিত রমজানকে গ্রেপ্তার করে। তারপর ওই বছরের ৫ নভেম্বর পুলিস আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। 

    মামলায় বিচার চলাকালীন অভিযুক্ত জেল হেফাজতেই ছিল। ইতিমধ্যে নাবালিকাকে যৌন নির্যাতনের জেরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বর্তমানে সে তার সন্তানকে নিয়ে থাকে। যদিও বিচারের সময় রমজান গর্ভস্থ সন্তান তার নয় বলে দাবি করে। তার জেরে আদালতের অনুমতিতে ডিএনএ পরীক্ষা হয়। তাতেই জানা যায়, সন্তান রমজানেরই। এছাড়াও ১৩ জন সাক্ষী এই মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ দেন। তার ভিত্তিতে পকসো আইনে নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে রমজানের যাবজ্জীবন সাজা হয়। বিকাশবাবু বলেন, এই সাজা সমাজে প্রভাব ফেলবে। এই ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ যারা ঘটায়, তাদের মনে আতঙ্ক ধরাবে। 

    যদিও মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। তাই উচ্চ আদালতে যাব।  পুলিসি ঘেরাটোপে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সাজাপ্রাপ্ত যুবককে। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)