• সূতিতে ফের পদ্মায় ভাঙন আতঙ্কে বাসিন্দারা
    বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ফের সূতির পদ্মা নদীতে ভাঙনের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সোমবার সূতির সৈয়দপুরে কয়েক মিটার এলাকা তলিয়ে গিয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকার আতঙ্কিত বাসিন্দারা আগেই জিনিসপত্র সরিয়ে নেন। বেশ কয়েকটি পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গিয়েছেন। বর্ষার মরশুমে নদীতে জল কানায় কানায় পূর্ণ রয়েছে। জল কমলে ভাঙন আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। সেই আতঙ্কে সিটিয়ে রয়েছেন তাঁরা। এখন নদীর পাড়ে পালা করে রাতপাহারাও দিচ্ছেন তাঁরা। জল কমলে ভাঙনের গ্রাসে চলে যেতে পারে বিএসএফ রোড থেকে শুরু করে বহু পাকা ঘরবাড়ি। পদ্মার পাড় বাঁধানোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

    এব্যাপারে জঙ্গিপুর মহকুমা সেচদপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয়কুমার সিংহ বলেন, ভাঙন রোধের কাজের অনুমোদন মিলেছে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বন্দোবস্তের কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই ভাঙন রোধের কাজ শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে ভাঙন এলাকায় বালির বস্তা ফেলা হবে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে সূতির নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সৈয়দপুরে ফের আচমকা ভাঙন শুরু হয়। নদীর পাড় বরাবর কয়েক মিটার এলাকা পদ্মায় তলিয়ে গিয়েছে। সপ্তাহ খানেক আগেই সৈয়দপুরের চাঁইপাড়ায় বেশ কয়েক মিটার নদীর পাড় ধসে যায়। ওই অংশ দিয়ে হু-হু করে জল ঢুকে নদীর পাশের এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। জল প্রায় বিএসএফ রোডের কাছাকাছি চলে আসে। রোডের উল্টোদিকে বহু বসতবাড়ি রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে বিএসএফ রোড তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রাস্তা তলিয়ে গেলে বহু বসতবাড়িও নদীগর্ভে চলে যেতে পারে বলে এলাকাবাসীর আশঙ্কা। 

    হাকিম শেখ ও সামশুল শেখের বাড়ি বিএসএফ রোড লাগোয়া। তাঁরা সকলেই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। যদিও প্রথম ভাঙনের রাতেই তাঁরা ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছেন। তারপর ভাঙন তেমনভাবে আর না হওয়ায় সাহস করে ঘরেই থাকছেন। যদিও ভাঙন শুরু হওয়ার পর থেকে পালা করে রাত জেগে নদী পাহারা দিচ্ছেন এলাকার যুবকরা। হাকিম বলেন, রাতে ঘরে থাকতে ভয় করছে। কিন্তু কোথায় যাব? ঘরের জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছি। আত্মীয়দের বাড়িতে রেখে এসেছি। আমরা ঘরেই থাকছি। তবে কেউ কেউ জেগে পাহারা দেয়। রাজা শেখ বলেন, প্রথম ভাঙনের পর রাত জেগে পাহারা দিচ্ছিলাম। ভাঙন আর হয়নি বলে দু’তিন রাত জাগা বন্ধ করি। কিন্তু আবার ভাঙন হওয়ায় রাতে নদীর পাড়ে পাহারা দিতে হচ্ছে।

    নুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ আবদুল্লাহ বলেন, এখন তো অল্পসল্প ভাঙন হচ্ছে। কিন্তু জল নামতে শুরু করলে কী হবে সেটাই বড় দুশ্চিন্তা। যদিও এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে। প্রশাসনকেও লিখিতভাবে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। আশা করি কয়েকদিনের মধ্যেই ভাঙন রোধের কাজ শুরু হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)