• ঘরে পড়ে পা বাঁধা যুবতীর দেহ, তিস্তায় ঝাঁপ পিসির
    বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, ময়নাগুড়ি: ঘরের মেঝেয় পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে ভাইঝির দেহ। অন্যদিকে, তিস্তা নদীতে ঝাঁপ তাঁর পিসির। মঙ্গলবার সাতসকালে এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় ময়নাগুড়ি ব্লকের খাগড়াবাড়ি-২’তে। কী কারণে যুবতীর মৃত্যু তা নিয়ে অবশ্য ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতার নাম অঙ্কিতা ঘোষ (২৫)। তাঁর পিসি সাধনা ঘোষের ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। 

    মঙ্গলবার সকালে ঘুম থেকে উঠে মেয়ের ঘরের দিকে যাচ্ছিলেন মণিকা ঘোষ। মণিকা অঙ্কিতার সৎমা। ছোট ছেলেকে মেয়ের কাছে রাখতে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু, মেয়ের ঘরের সামনে যেতেই মণিকা দেখেন মেয়ের ঘর থেকে একটি ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন ননদ সাধনা ঘোষ। তিনি সাধনাকে জিজ্ঞাসা করতেই সে জানায়, কাজ আছে। ময়নাগুড়ি বাজারের দিকে যাব। এরপরেই মণিকা ঘরে গিয়ে দেখেন মেয়ে মেঝেয় পড়ে রয়েছে। তাঁর একটি পায়ে গামছা বাঁধা। মেয়েকে ডাকলেও সে কোনও সাড়াশব্দ না করায় কাছে গিয়ে দেখেন মেয়ের নিথর দেহ। সেইসময় অঙ্কিতার বাবা অরবিন্দ ঘোষ জমিতে কাজ করছিলেন। তাঁকে ডেকে আনেন মণিকা। খবর যায় ময়নাগুড়ি থানায়। পুলিস ঘটনাস্থলে এসে যুবতীকে উদ্ধার করে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে জানান। ওই সময়ই খবর আসে মৃত যুবতীর পিসি তিস্তায় ঝাঁপ দিয়েছেন। স্থানীয় বেশ কয়েকজন তাঁকে উদ্ধারও করেছে। 

    এদিকে, বোনের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে খুড়তুতো দিদি রাখি ঘোষ আলিপুরদুয়ার থেকে ময়নাগুড়িতে চলে আসেন। তিনি বলেন, সম্পত্তির জন্য দিনের পর দিন অঙ্কিতার উপর অত্যাচার চলছিল। বোনের মৃত্যুর জন্য এই পরিবারের লোকজনই দায়ী। 

    যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে অঙ্কিতার সৎ মা মণিকা। তিনি বলেন, মেয়ে এমএ পাশ করেছে। ও নিয়মিত ঘুমের ওষুধ খেত। গত ১০ দিন থেকে অঙ্কিতার পিসি ওর সঙ্গে ঘুমাতো। পারিবারিক কারণে ননদ সাধনা ১০ দিন ধরে আমাদের এখানেই থাকছে। আমাদের সন্দেহ, ননদই মেয়েকে মেরেছে। তবে এরসঙ্গে সাধনা ছাড়াও আরও কেউ জড়িত রয়েছে। 

    ময়নাগুড়ি থানার আইসি সুবল ঘোষ বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। আমরা তদন্ত করছি। অঙ্কিতার বাবা অরবিন্দ ঘোষ মেয়ের মৃত্যুর বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। মৃত যুবতীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর কুড়ি আগে একটি দুর্ঘটনায় অঙ্কিতার মা মারা যান। তার কয়েক বছর পর অঙ্কিতার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বাড়িতে দ্বিতীয় স্ত্রী, অঙ্কিতা এবং ছোট একটি ছেলেকে নিয়ে থাকেন অরবিন্দ। তিনি কৃষিকাজ করেন।    তদন্তে পুলিস। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)