• লোনের কিস্তির জন্য চাপ, পাহাড়পুরে আত্মঘাতী বধূ
    বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: লোনের কিস্তির জন্য চাপ। বাড়ি এসে শাসানি। আর এরই জেরে আত্মঘাতী হলেন এক মহিলা। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর পঞ্চায়েতের জালিয়াপাড়া এলাকায়। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম ময়না খাতুন (৩৫)।

    পেশায় দিনমজুর স্বামী মকদুল সরকারের অভিযোগ, তাঁরা একটি স্মল ফিনান্স থেকে প্রথমে ২০২০ সালে লোন নেন। তা শোধ হয়ে যাওয়ায় ফের ২০২১ সালে কিছু টাকা লোন দেয় সংস্থাটি। সেই লোনও শোধ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দিন তিনেক আগে আচমকা ওই ফিনান্স সংস্থার কয়েকজন কর্মী বাড়িতে এসে স্ত্রীকে বলেন, আমাদের নাকি লোনের অনেক টাকা বকেয়া। সুদ সহ তা দ্রুত শোধ করতে হবে। মঙ্গলবার টাকা জোগাড় করে রাখতে বলে যান ওই কর্মীরা। টাকা দিতে না পারলে আমাদের দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। এরপরই চিন্তায় পড়ে যান স্ত্রী। এর ওর কাছ থেকে টাকা জোগাড়ের চেষ্টা করেন। কিন্তু না পেরে এদিন আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। কোতোয়ালি থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত জানান, রাত পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

    এলাকার প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের তহিজুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। কারা লোনের জন্য ওই মহিলাকে চাপ দিয়েছিলেন পঞ্চায়েতের তরফেও খোঁজখবর নিতে বলা হবে। 

    এদিন বাঁধের রাস্তা পেরিয়ে তিস্তার চরে ময়না খাতুনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শোকে ভেঙে পড়েছেন পরিবারের লোকজন। সৎ মেয়ে মৌসুমী সরকারের অভিযোগ, এমনভাবে শাসানো হয়েছিল যে, মানসম্মান রক্ষা করতেই মা আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হল। প্রতিবেশী রুপালি বেগম বলেন, আমার শ্বশুর ময়নাকে বাড়ির পাশে একটি গাছে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলতে দেখেন। তাঁর বক্তব্য, কিস্তির টাকা চেয়ে ময়নাকে যে চাপ দেওয়া হয়েছিল, প্রথমে তিনি তা কাউকে জানাননি। সোমবার তিনি পাড়ায় কয়েকজনকে বিষয়টি বলেন। মঙ্গলবার সকালে যেভাবেই হোক টাকা জোগাড় করে রাখতে বলে গিয়েছে ফিনান্স সংস্থার লোকজন। একথা শুনে পাড়ার লোকজন তাঁকে সাহসও জুগিয়েছিলেন। বলেছিলেন, টাকা চাইতে এলে তাঁরা সবাই মিলে কথা বলবেন। ময়নার কোনও ভয় নেই। কিন্তু প্রতিবেশীদের আশ্বাসে ভরসা রাখতে পারলেন না তিনি।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)