• গঙ্গার জলস্তর কমতেই ফের ভাঙন আতঙ্ক বাড়ছে ভূতনির বাসিন্দাদের
    বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, মানিকচক: জল বাড়লে বন্যা পরিস্থিতি। কমলে ভাঙন। জোড়া বিপদে দিশেহারা অবস্থা ভূতনি সহ মালদহের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের। গঙ্গার জলস্তর কমতেই সোমবার সন্ধ্যা থেকে বাগডুকরা ও কালুটোন টোলায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে।  বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সব সরিয়ে নিয়ে যেতে শুরু করে দিয়েছেন দুর্গতরা।

    মানিকচক ব্লকের ভূতনির তিনটি অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। বানভাসি উত্তর ও দক্ষিণ চণ্ডীপুর, হিরানন্দপুরের দুর্গতরা প্রায় তিন সপ্তাহ আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধে বা স্কুলের ত্রাণকেন্দ্রে। জলবন্দী হয়ে সেখানেই দিন কাটছে তাঁদের। এই পরিস্থিতির মধ্যে গত কয়েকদিন লাগাতার কমেছে গঙ্গার জলস্তর। তাতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছিল বাসিন্দাদের। মঙ্গলবার গঙ্গার জলস্তর কমে  ২৪.৮৬ মিটার হলেও জারি রয়েছে হলুদ সতর্কতা।

    এসবের মাঝেই বিপদ বাড়িয়েছে ভূতনির দুটি গ্রামের নদী তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙন। হিরানন্দপুর পঞ্চায়েতের বাগডুকরা গ্রামে হঠাৎ করে প্রায় ৭০ মিটার এলাকা জুড়ে ব্যাপক ভাঙন দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যে চাষের জমি এবং বিশালাকার পুরনো বটগাছ তলিয়ে যায় নদীবক্ষে। খবর ছড়াতেই জমায়েত হন স্থানীয় বাসিন্দারা। অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ভাঙন দেখে। ছুটে আসেন এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রানি মণ্ডল। তিনি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে বলেন, গঙ্গার জল কমে যাওয়ায় এই ভাঙন। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। তবে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে কিছুটা দূরে ভাঙন হওয়ায় খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। বিষয়টি আমাদের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র, ব্লক প্রশাসন ও সেচ দপ্তরকে জানিয়েছি। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

    একইভাবে উত্তর চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের কালুটোন টোলা গ্রামে বাঁধের প্রায় ৫০ মিটার অংশ মুহূর্তের মধ্যে নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। এই গ্রামের বাঁধেই বসবাস করছেন কালুটোন টোলা ও পশ্চিম রতনপুরের প্রায় ৫০টি পরিবার। তার উপর এই ভাঙন হওয়ায় কতদিন এই বাঁধ থাকবে, তা নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছে দুর্গতদের।

    স্থানীয় বাসিন্দা অঙ্গদ মাহাতো বলেন, যেভাবে ভাঙন হচ্ছে, তাতে কালুটোন টোলা গ্রামের অস্তিত্ব থাকবে না। যে বাঁধে আছি, সেখানেই ভাঙন হচ্ছে। আমরা কোথায় যাব, কিছুই ভেবে উঠতে পারছি না। শুধু বাড়িঘর বাঁচাতে সব খুলে বাঁধের একপাশে রেখেছি। ভাঙন রুখতে মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনও কাজ শুরু হয়নি।

    এবিষয়ে জেলা সেচ দপ্তরের আধিকারিকের মন্তব্য, নজরদারি চালানো হচ্ছে, তবে ভয়ের কিছু নেই। বাগডুকরায় ভাঙনের জায়গা থেকে জনবসতি অনেক দূরে। তার অনেক পরে বাঁধ রয়েছে। অন্যদিকে কালুটোন টোলায় রিং বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে। ফলে ভয়ের কিছু নেই। ভাঙনের জায়গায় কাজের জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে কাজ শুরু হবে।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)