• সন্দীপকে সপাটে চড়, ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা, সাসপেন্ড করল রাজ্য
    বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালের দুর্নীতি মামলায় সোমবার রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে।  মঙ্গলবার তাঁকে আলিপুর আদালতে হাজির করার পর ঘটে যায় ধুন্ধুমার‑কাণ্ড। কোর্ট চত্বরে উপস্থিত কিছু মানুষজন রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়ে ধৃত সন্দীপ ঘোষকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। কয়েকজন আবার অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাঁকে মারতেও উদ্যত হয়। ভিড়ের মধ্যে পিছন থেকে দু’বার সপাটে চড় মারা হয় প্রাক্তন অধ্যক্ষের মাথায়। এমনকী তাঁর তিন শাগরেদ বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরা ও আফসার আলিকে ঘিরেও ‘চোর চোর’ স্লোগান ওঠে। শুনানি শেষে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সহ চারজনকেই ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। এদিনই স্বাস্থ্যদপ্তর সাসপেন্ড করেছে সন্দীপ ঘোষকে। স্বাস্থ্যভবনের তরফে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার তদন্তের প্রেক্ষিতেই এই পদক্ষেপ। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের পেনাল ও এথিক্যাল কমিটি থেকেও সরানো হয়েছে তাঁকে।

    এদিন সকাল থেকেই তেতে ছিল আলিপুর জজ কোর্ট চত্বর। দুপুরের পরই বাইরে অটোস্ট্যান্ডের সামনে অনেকটা জায়গা গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। বাড়ানো হয় পুলিসি নিরাপত্তাও। বিকেলে একটি গাড়িতে করে কড়া প্রহরায় প্রথমে আসে লাল কাপড়ে বাঁধা এই মামলার যাবতীয় নথিপত্র ও কেস‑ডায়েরি। তার কিছু পরেই অন্য গাড়িতে করে আনা হয় অভিযুক্তদের। সন্দীপ ঘোষ আদালত চত্বরে আসা মাত্রই ক্ষোভে ফেটে পড়েন আইনজীবী থেকে সাধারণ মানুষ। পিল পিল করে ভিড় বাড়তে থাকে কোর্ট চত্বরে। শুরু হয় বিচার চেয়ে নানা স্লোগান।

    এজলাসেও সন্দীপবাবুকে লক্ষ্য করে কিছু আইনজীবী ‘ধিক্কার ধিক্কার’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। এতে শুনানি শুরু হতে দেরি হয়। এজলাসে মুখ লুকোতে মাস্ক পড়েন আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ। কিন্তু কিছু কৌঁসুলি তা দেখে ‘মাস্ক খোল’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। শেষপর্যন্ত মাস্ক খুলতে বাধ্য হন সন্দীপবাবু। শুনানি শেষে বিচারক ১০ সেপ্টেম্বর ধৃতদের ফের কোর্টে হাজির করার জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেন। এরপর চার অভিযুক্তকে এজলাস থেকে বের করে গাড়িতে তোলার সময় রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়েন কোর্ট চত্বরে উপস্থিত মানুষ। ধৃত সন্দীপ ঘোষকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি চড় মারা হয়। পরিস্থিতি খারাপ দেখে এগিয়ে আসেন আদালত চত্বরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুলিসের আধিকারিকরা। দ্রুত অভিযুক্তকে সিবিআইয়ের গাড়িতে তুলে বের করে দেওয়া হয়। তারপরও অবশ্য দীর্ঘ সময় আদালত চত্বরে ‘বিচার চাই’ স্লোগান দিতে থাকেন একদল আইনজীবী। সঙ্গ দেন পথচলতি কিছু মানুষ। এই ঘটনার জেরে পরবর্তী শুনানিতে সন্দীপবাবুকে কোর্টে হাজির করা হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)