• খতিয়ানে যোগ হবে মালিকের ফোন নম্বর, জমি বেহাত হলেও ঢুকবে মেসেজ 
    বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • প্রীতেশ বসু, কলকাতা: জমিচুরি ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ নবান্নের। রাজ্যের সাড়ে পাঁচ কোটি খতিয়ানের সঙ্গে জমির মালিকদের নিজস্ব ফোন নম্বর সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য। কাজটি সম্পূর্ণ হলে রাজ্যের কোনও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি অসাধু উপায়ে কেউ বিক্রি কিংবা অন্য কারও নামে ট্রান্সফার করতে পারবে না। এমন অন্যায় করতে গেলেই জমির আসল মালিকের মোবাইল ফোনে অ্যালার্ট মেসেজ চলে যাবে। ফলে হাতেনাতে ধরা পড়ে যাবে জমিচুরির চক্র। রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, তথ্য-প্রযুক্তিগত প্রয়োজনীয় কাজ ইতিমধ্যেই অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। ফলে পুজোর পর পরই বাংলার তরফে এই কর্মসূচি চালু হয়ে যাবে।

    জমিচুরি চক্রের পান্ডারা অনেক ক্ষেত্রেই জাল দলিল তৈরি করে একজনের জমি অন্যের নামে ট্রান্সফার করে। জমির আসল মালিকের অজান্তেই ঘটে যায় এই অপকর্ম। নানা জায়গা থেকে বহুদিন ধরেই এমন অভিযোগ পেয়েছে রাজ্য সরকার। এরপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এবার প্রত্যেকটি খতিয়ানের সঙ্গে জমির মালিকের ফোন নম্বর সংযুক্ত হবে। রাজ্যের এক আধিকারিকের দাবি, তাহলে এই বিপদ থেকে রাজ্যবাসীকে বাঁচানো আর কঠিন হবে না।

    ঠিক হয়েছে, রাজ্যের এই নয়া কর্মসূচি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে জোরদার প্রচার চালানো হবে। জমির মালিকদের বলা হবে, তাঁরা যেন জমির খতিয়ানের সঙ্গে নিজ নিজ ফোন নম্বর সংযোগের আবেদন করেন। ফোন নম্বর যোগের আবেদন কীভাবে করা যাবে? এক আধিকারিক জানান, ভূমিসংস্কার দপ্তরের ‘বাংলার ভূমি’ পোর্টালে ঢুকেই নিজের সচিত্র পরিচয়পত্র আপলোড করে আবেদন করা সম্ভব। এই পরিচয়পত্র ব্যবহার করেই ব্লক স্তরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে দিয়ে যাচাই প্রক্রিয়া চালানো হবে। দেখে নেওয়া হবে, সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীই জমিটির প্রকৃত মালিক কি না। তার পরেই খতিয়ানের সঙ্গে তাঁর ফোন নম্বর যোগ করা হবে।

    প্রসঙ্গত, ২০১৯ সাল থেকে জমি রেজিস্ট্রেশনের সময় ক্রেতার ফোন নম্বর নেওয়া হয়। একই নম্বর ব্যবহার করা হয় মিউটেশনের ক্ষেত্রেও। ফলে গত পাঁচ বছরে কিছু জমির নথির সঙ্গে ফোন নম্বর যোগ হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাকি রয়ে গিয়েছে এই সংযুক্তিকরণ। তাই এই বিশেষ কর্মসূচির প্রয়োজন পড়ছে। রাজ্যের এক আধিকারিক জানান, কোনও ব্যক্তির নামে একাধিক খতিয়ান থাকলে তার প্রতিটিরই জন্য পৃথক আবেদন করা যাবে। রাজ্যে জমির খতিয়ান সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি। নবান্ন মনে করে, প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে মালিকের ফোন নম্বর যত দ্রুত যুক্ত হবে, জমি বেহাত হওয়ার বিপদ রুখে দেওয়া যাবে তত তাড়াতাড়ি।
  • Link to this news (বর্তমান)