• সাক্ষাৎপ্রার্থীদের ঘরের বাইরে দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রাখতেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ
    বর্তমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শুধু গাদা গাদা ‘দুর্নীতি’র অভিযোগই নয়, দুর্ব্যবহারেও ‘সেরা’ হয়ে উঠেছিলেন সিবিআইয়ের হাতে ধৃত প্রাক্তন আর জি কর অধ্যক্ষ ডাঃ সন্দীপ ঘোষ। ২০১৮ থেকে ২০২১ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সুপার তথা উপাধ্যক্ষ এবং ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন সন্দীপ। এই দুই পর্বেই দুব্যর্বহারের অভিযোগে তিনি রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রায় সমস্ত মহলে বিস্তর দুর্নাম কুড়িয়েছেন। এমনই অভিযোগ করছেন তাঁর সঙ্গে কাজ করা অফিসার, চিকিৎসক ও কর্মীরাই। 

    কেমন ব্যবহার করতেন সন্দীপ? ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, জনস্বার্থে বা প্রশাসনিক জরুরি প্রয়োজনে কোনও সিনিয়র অধ্যাপক বা বিভাগীয় প্রধান যদি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যেতেন, পছন্দের লোক না হলে তিনি দেখাই করতেন না। কলেজ বা হাসপাতালের চিকিৎসকদের ক্ষেত্রেও তিনি চিরকুট কালচার তৈরি করেছিলেন। অর্থাৎ কলেজের চিকিৎসক বা বিভাগীয় প্রধান হলেও তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য কাগজে নিজের নাম, বিভাগ ইত্যাদি লিখে পাঠাতে হবে। এতেও অবশ্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তিনি দেখা করতেন না। ঘরের বাইরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখতেন। অফিস থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগেও সাক্ষাৎপ্রার্থীর দিকে ঘুরেও দেখতেন না। 

    ন্যাশনালের এক আধিকারিক বলেন, নিজের পছন্দের লোকজন, ঠিকাদার হলে পরিস্থিতি যেত পাল্টে। তাঁদের ছিল সুপারের বন্ধ ঘরে অবারিত দ্বার। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ হওয়ার পর এই প্রতাপ আরও বেড়ে যায়। ‘অ্যাডিশনাল সিকিউরিটি পার্সোনাল’ বা সরকারের অনুমোদিত নিরাপত্তারক্ষীদের হাসপাতাল ও কলেজের নিরাপত্তার বদলে নিজের নিরাপত্তায় সন্দীপ ব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ। আর জি কর-এর প্লাটিনাম জুবিলি ভবনের অধ্যক্ষ অফিসে তাঁর ঘরের বাইরে পর্যন্ত যাওয়া দূরস্থান, একতলাতেই সাক্ষাৎপ্রার্থীকে আটকে দিতেন সন্দীপের দেহরক্ষীরা। নাম, ধাম ইত্যাদি জানার পর কে এসেছেন, সেটা ‘স্যারকে’ জানাতে তাঁরা ছুটতেন। সাক্ষাৎপ্রার্থীকে একতলায় বসিয়ে রাখা হতো। ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও সাড়া মিলত না। শেষে কয়েক ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর সেই দেহরক্ষীরাই জানাত—‘না, স্যারের আজ সময় হবে না। আপনি যেতে পারেন।’ এভাবে ক্ষমতার জোরে মানুষকে চরম হেনস্তা ও অপমান করার অভিযোগ ছিল প্রাক্তন আর জি কর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।        
  • Link to this news (বর্তমান)