আরজি কর কাণ্ডে নাম জড়ানো 'বিতর্কিত' চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের বদলি
এই সময় | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় গোটা রাজ্য তোলপাড়। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তির দাবি উঠেছে সব মহল থেকে। এরই মধ্যে চর্চায় উঠে আসেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। এবার তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে বদলি করল রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর।আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের সেমিনার হল থেকে তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেখানে কি বহিরাগতরা প্রবেশ করেছিল? ‘ক্রাইম সিন’-এর বেশ কিছু ছবি (ছবিগুলির সত্যতা যাচাই করেনি এই সময় অনলাইন) প্রকাশ্যে আসার পরেই বিতর্ক শুরু হয়। যদিও গত শুক্রবার কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় জানান, সেমিনার রুমে বহিরাগতদের ঢোকার দাবি ভুয়ো। তদন্তের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত লোকজনই সেখানে ছিলেন।
সাংবাদিক বৈঠকে দুটি ছবি দেখান ডিসি সেন্ট্রাল। ছবিগুলো দেখিয়ে সেখানে কোন কোন ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন তা চিহ্নিত করেন। সেখানে কলকাতা পুলিশ কমিশনার, গোয়েন্দা বিভাগের ভিডিয়োগ্রাফার, অ্যাডিশনাল পুলিশ কমিশনার, ফরেন্সিক বিভাগের সদস্য, টালা থানার পুলিশকর্মী, ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞেরা উপস্থিত ছিলেন বলে তিনি দাবি করেন।
এরপরেই সেখানে উপস্থিত 'বেগুনি শার্ট' পরা একজনের পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। IMA-র সদস্য অভীক ঘোষ বলেন, 'আমরা সন্দেহ করছি ওই বেগুনি শার্ট পরা ব্যক্তি বিরুপাক্ষ বিশ্বাস। তাঁর সঙ্গে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তিনি সেমিনার হলে কী করছিলেন?'
বিরুপাক্ষ বিশ্বাস ঘটনার দিন আরজি কর হাসপাতালে উপস্থিত থাকার কথা নিজেই স্বীকার করেছিলেন। কিন্তু, সেমিনার হল অর্থাৎ যেখান থেকে তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল সেখানে তিনি উপস্থিত ছিলেন না বলেই দাবি করেছিলেন।
তিনি এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'আমি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। সেমিনার রুম কোথায় তা জানতাম না। পরে সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারি।' তিনি পাল্টা বলেন, 'পুলিশের কর্ডন করা জায়গায় অংশে কি কেউ ঢুকতে পারে? আমি তো মানসিক ভারসাম্যহীন নই!' এবার সেই বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকেই বদলি করা হল কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে।
উল্লেখ্য, আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেবল কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আপাতত মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। ওই ঘটনায় জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সরব সমাজের সবস্তরের মানুষ। দোষীদের ফাঁসির সাজার দাবি করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইন’ আনার জন্য কেন্দ্রের কাছে আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।