মধ্যস্থতার জন্য কুণালের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন? জুনিয়র ডাক্তাররা বলছেন, 'মিথ্যে'
আজ তক | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রতিবাদ আন্দোলন নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের সঙ্গে কোন মধ্যস্থতা হয়নি বলে দাবি করলেন আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের আরও দাবি, কুণাল নাকি মিথ্যা বলছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে কিঞ্জল নন্দ বলেন, 'কুণালের সঙ্গে আলোচনার খবর একেবারেই মিথ্যা। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে কোনওরকম কোনও যোগাযোগ করা হয়নি কুণাল ঘোষের সঙ্গে। আমরা যেটুকু করেছি, তা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে যে ডিসিশন হয়েছে, সেটাই করেছি। অন্য কারও মধ্যস্থতা ছিল না। গত আন্দোলনেও ছিল না, আগামীতেও থাকবে না। এটাই আমাদের স্ট্যান্ড। আরজি কর নিয়ে এই আন্দোলন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। এই ভাবেই আন্দোলন চলবে।'
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। জুনিয়র ডাক্তাররা স্মারকলিপি তুলে দেন। বিনীত গোয়েলের কাছে তাঁরই ইস্তফা দাবি করা হয়। যদিও বিনীত জানিয়ে দেন নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ চাইলে তাঁকে সরিয়ে দিতে পারেন। এরপরেই তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, 'আজ বিকেলে 'সংবাদ প্রতিদিন' দপ্তরে আরজিকরের চার আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসককে দেখা যাওয়ায় কোনো কোনো মহল অকারণ বিতর্ক ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ ঘটনাচক্রে। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে আন্দোলনের সমর্থনে বিষয়গুলি live সম্প্রসারণের জন্য তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ওই বিভাগ। ঘটনাচক্রে আমার ঘরটি সামনেই। দেখা হওয়ায় স্বাভাবিক খবর নিচ্ছিলাম। বিকেলে আমার অফিসে সাংবাদিক বন্ধুরা আসেন, তারা বিষয়টি দেখেন, কৌতূহল বাড়ে। কিন্তু এই চারজনের সঙ্গে আমার রাজনৈতিক কোনো আলোচনা হয়নি। তবে, আজ সকালে আন্দোলনকারীদের তরফে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁদের তরফে বলা হয় নির্দিষ্ট কিছু কারণে লালবাজারের ধরণা এগোন ঠিক হবে না। তাঁরা আজই এখনই নগরপাল ইস্তফা না দিলে উঠবেন না, এই দাবিতে অনড় থাকবেন না। পরে ইস্তফা দিলেও হবে। আজ শুধু নগরপালের হাতে স্মারকলিপি দিয়ে দেখা করতে চান। তারপর রাজপথ থেকে ধর্ণা তুলে নেবেন। পরবর্তী আন্দোলন চলবে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী যদি বিষয়টি বিবেচনা করেন, তাহলে ব্যারিকেড থেকে একটু এগিয়ে অবস্থান এবং তারপর স্মারকলিপিতেই কর্মসূচি আপাতত শেষ হবে। তবে আন্দোলন চলবে। এরপরের ঘটনাক্রম আমি লিখছি না। দুপুরে ব্যারিকেড সরে, নগরপাল স্মারকলিপি নেন, ধর্ণা আপাতত ওঠে। সকালের ফোনের আলোচকরা এবং বিকেলে দেখা হওয়া চারজন সম্পূর্ণ আলাদা। স্মারকলিপি এবং ধরণা ওঠার বিষয়টি বেলা 11:30 -এর মধ্যেই চূড়ান্ত ছিল। চিকিৎসক আন্দোলনকারীরা অত্যন্ত দায়িত্বশীল মনোভাবের পরিচয় দিয়েছেন। তাঁদের আন্দোলন ও প্রতিবাদের প্রতি আমার এবং আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। একাধিক সিনিয়র চিকিৎসকও যথাযথ পরামর্শ নিয়ে জুনিয়রদের পাশে থাকছেন। ন্যায়বিচার হোক। ধর্ষক, খুনির ফাঁসি হোক। দুর্নীতির চক্র নিপাত যাক। চিকিৎসক আন্দোলনে যাঁরা যেভাবে সহযোগিতা চাইবেন, রাজনীতির বাইরে এক নাগরিক হিসেবে সাধ্যমত সঙ্গে থাকব।' (অসম্পাদিত)
আরজি কর নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই কুণালের এই দাবি ভাইরাল হয়ে যায়। বুধবার এই বিষয়ে জুনিয়র ডাক্তাররা বলেন, 'এই আন্দোলন অরাজনৈতিক। সংবাদমাধ্যমে যা বেরিয়েছে তা আন্দোলনের মূল সুরের সমার্থক নয়। একটি সংবাদমাধ্যমে আমাদের ছবি দেখানো হয় এই বলে যে, আমরা নাকি আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি হিসাবে মধ্যস্থতা করতে এসেছি। এটা পুরোপুরি মিথ্যা। ওই সংবাদমাধ্যম আমাদের আমন্ত্রণ করেছিল। সেখানে কাকতালীয়ভাবে কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা হয়। আমরা কোনওভাবেই আন্দোলনকারীদের মধ্যস্থতাকারী হিসাবে যায়নি। কোনও আলোচনা হয়নি। আমাদের মধ্যে খুব বেশি লে ২ থেকে ৩ মিনিট কথা হয়েছে। না জানিয়ে ছবি তুলে অপপ্রচার করা হয়েছে।'
এদিকে, জুনিয়র ডাক্তাররা বুধবার জানিয়ে দিয়েছেন যে তাঁদের কর্মবিরতি জারি থাকবে। তাঁরা বলেন, 'আমাদের বিচারের দাবি এখনও অপূর্ণ। আমাদের বোনের বিচার না হওয়া পর্যন্ত এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও পদত্যাগ করেননি, যা আন্দোলনরত ডাক্তারদের আরেকটি দাবি ছিল। আমরা বিশ্বাস করি যে এই মামলায় অনেক লোককে ঢাল করা হচ্ছে এবং সত্য অবশ্যই বেরিয়ে আসবে।'