জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের মাঝে অপসারিত কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যালের অধ্যক্ষ, উঠছে একাধিক প্রশ্ন
প্রতিদিন | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সুবীর দাস, কল্যাণী: চিকিৎসক পড়ুয়াদের একাধিক দাবির মাঝে সরিয়ে দেওয়া হল কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কে। সেই পদে নিয়ে আসা হয়েছে ওই হাসপাতালেরই স্ত্রী রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মণিদীপ পাল। আজ বুধবারই সেই দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন তিনি। পুরনো অধ্যক্ষের এনএমসি যোগ্যতায় মান পূরণ না হওয়ায় এই নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়। তবে জুনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। সঙ্গে রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্যকে পদত্যাগ করতে হবে।
আর জি কর কাণ্ডের পর নির্যাতিতা তরুণী দোষীদের শাস্তি ও কলেজের নিরাপত্তা জোরাল করার দাবিতে আন্দোলনে বসেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তবে জরুরি পরিষেবা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা। এমনাবস্থায় মঙ্গলবারে সদ্য প্রাক্তন অভিজিতের ঘরে হাসপাতালের নিরাপত্তা-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। সেখানে সমস্যার সমাধান না হওয়ায় তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন আউটডোর, ইনডোর থেকে জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
সূত্র মারফত খবর, আন্দোলনরত চিকিৎসকরা অধ্যক্ষের ঘরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখালে তিনি জানান, তাঁদের দাবি মেনে নিচ্ছেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাঁর কাছে নেই। সেই মোতাবেক পড়ুয়া চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী উপাচার্য দেবাশিস বসুকে ফোন করলে তিনি জানান, যা করার অধ্যক্ষ করবেন। পড়ুয়ারা ফের অধ্যক্ষের কাছে আসলে অভিজিৎবাবু তাঁদের সামনেই দেবাশিসবাবুকে ফোন করেন। অভিযোগ, সহ-উপাচার্য অধ্যক্ষকে জানান, এই আন্দোলন বন্ধ করতে হবে। যদি না পারেন তাহলে পদ থেকে সরে যান।
তার পর থেকেই অবস্থানে বসে পড়েন পড়ুয়া চিকিৎসকরা। তাঁদের দাবি, তাদের দাবিগুলো পূরণ করার পাশাপাশি তাঁদের কাছে অবিলম্বে ক্ষমা চেয়ে সহকারী উপাচার্য দেবাশিস বসুকে পদত্যাগ করতে হবে। এই আবহেই বুধবার সকালে একটি নোটিস দিয়ে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কে অধ্যক্ষ পদ থেকে সরানো হয়।
নতুন অধ্যক্ষ মনদিপ পাল বলেন, ” সরকারি হাসপাতালে এই পদগুলিতে পরিবর্তন করা হয়। এতে নতুন কিছু নেই। আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, অভিজিৎবাবু সেই দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছেন। হাসপাতালের কিছু সমস্যা রয়েছে তা মেটানোর চেষ্টা করব।”
এদিকে আন্দোলনে অনড় জুনিয়র চিকিৎসকের এক প্রতিনিধি বলেন, “অধ্যক্ষের পদে কে বসলেন তা নিয়ে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। আমাদের নিরপত্তা, বিশ্রামকক্ষ-সহ একাধিক দাবি রয়েছে তা মানতে হবে। আমরা প্রো-ভিসির পদত্যাগ দাবি করছি। শুধু পদত্যাগ নয় আমাদের কাছে এসে ক্ষমা চাইতে হবে। তা না হলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”