• 'যখন আমার মেয়ের দেহ ঘরে শায়িত ছিল, তখন টাকা দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিস'!
    ২৪ ঘন্টা | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: 'যখন আমার মেয়ের দেহ ঘরে শায়িত ছিল, তখন ডিসি নর্থ আমাদের ঘরের একটা গলিতে ঢুকে তিনি আমাদের টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেন'। আরজি কর কাণ্ড বিস্ফোরক নির্যাতিতা বাবা-মা। বললেন, 'আমরা দেহটা রেখে দিতে চেয়েছিলাম।  কিন্তু এত চাপ তৈরি করা হয়েছিল সেসময়ে। আর কিছু করার ছিল না। দেহ দাহ করতে বাধ্য হই'। 

    আরজি করে তরুণী চিকিত্‍সককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা তোলপাড় গোটা রাজ্য়। প্রতিদিনই কোনও না কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে রাজ্য়ের বিভিন্ন প্রান্তে। আজ, বুধবার রাতে আরজি করের সামনে  জমায়েতের ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ছিল ১ ঘণ্টা প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি। সেই কর্মসূচি অংশ নিয়ে পথে নামলেন সাধারণ মানুষ ও তারকারাও। শহরের সীমা ছাড়িয়ে সেই প্রতিবাদে ছড়িয়ে পড়ল জেলা ও মফঃস্বলেও।

    সাংবাদিক সম্মলনে নির্যাতিতার বাবা বললেন, 'ওরা কিন্তু আমার মেয়ের কোনও শরীরিক পরীক্ষা করেনি। যেটা প্রথম কাজ ছিল, সেটা কিন্তু করেনি। বেলা এগারোটার সময়ে জানানো হয়, আমাদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। কোনও মেডিক্যাল টেস্ট হল না, আগে তারা বলে দিল আত্মহত্যা করেছে। কেন করেছে এটা, সেটা তারা জানে। তারাই উত্তর দেবে। আমাদের মেয়েকে দেখতে আমরা যখন হাসপাতালে যাই, ১২টা ১০ মিনিটে। মেয়ের মুখ দেখতে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা বাইরে বসিয়ে রাখা হয়। মেয়ের মা তখন পুলিসের হাতে পায়ে ধরতে শুরু করে। ভিতরে তখন লোকজন ঘোরাঘুরি করছে'।

    কন্যাহারা বাবার প্রশ্ন, 'ময়নাতদন্ত করতে এত দেরি করল কেন?  আমি ৬.৩০ থেকে ৭টার মধ্যে FIR করলাম, রেজিস্টার হল ১১.৪৫ মিনিটে। এত ডাক্তার থাকা সত্ত্বেও, পুলিস একটা অস্বাভাবিক মামলা রুজু করল। কী কারণে? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, পুলিস কেউ FIR করল না। ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আরজি কর হাসপাতালে ছিলাম। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে একটি কথাও বলেনি'।

    ৯ অগাস্ট সকালে আরজি করের সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় ওই চিকিত্‍সকের দেহ। এরপর সেদিন গভীর রাতেই দেহ দাহ করে দেওয়া হয়। নির্যাতিতার বাবা স্পষ্টতই জানান,  'আমরা দেহটা রেখে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এত চাপ তৈরি করা হয়েছিল সেসময়ে, আমরা টালা থানায় গিয়েছিলাম। থানার সামনে আমরা ১ ঘণ্টার পর উপর বসেছিলাম। এমন একটা পরিবেশ তৈরি করে যে, আমরা বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যাই। বাড়ি গিয়ে দেখি, তিনশো থেকে চারশো পুলিস আমার বাড়ির সামনে ব্য়ারিকেড করে দাঁড়িয়ে আছে। আর কিছু করার ছিল না। দেহ দাহ করতে বাধ্য হই। আমার মেয়ে যেদিন মারা গিয়েছে, শ্মশানের খরচ ফ্রি করে দিয়েছে, কারা'?

    এদিক হাইকোর্টের নির্দেশে যখন  আরজি কাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই, তখন লালবাজারে নিয়মিত সাংবাদি সম্মেলনে করছেন কলকাতা পুলিসের ডিসি ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। নির্যাতিতার বাবা বলেন, ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বারবার সাংবাদিক সম্মেলনে করে মিথ্যা কথা বলছে। কারণটা কি? কেন করছেন এই মিথ্য়াচার। আমাদের সব প্রশ্নের উত্তর কে দেবে? পুলিস, প্রশাসন নাকি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ? স্বাস্থ্য়ভবন'?

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)