• মাটির ভাঁড় ও গ্লাসের চাহিদা বাড়ছে, আশার আলো দেখছেন মৃৎশিল্পীরা
    বর্তমান | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: প্লাস্টিক নিষিদ্ধ হওয়ায় ও সচেতনতা বাড়ায় আশার আলো দেখছেন মৃৎশিল্পীরা। মাটির চায়ের ভাঁড় থেকে গ্লাস ও দইয়ের ভাঁড়ের কদর বাড়ছে। পূর্বস্থলীর পারুলিয়াতে চায়ের জন্য মাটির বড় ভাঁড়, গ্লাস তৈরি করে আশার আলো দেখছেন শিল্পীরা। মাটির তৈরি চায়ের নানা ধরনের ভাঁড়ের চাহিদা বাড়ছে। মাটির ভাঁড়ে বাঙালি চায়ে চুমুক দিচ্ছে। কয়েক বছর আগেই মৃৎশিল্পীরা তাদের শিল্প লাটে তুলে দিয়েছিলেন। নতুন প্রজন্ম আর এই পেশায় আসতে চাইছিলেন না। মাটির ভাঁড় তৈরি কমে গিয়েছিল। অনেক মৃৎশিল্পী পেশা বদল করে ফেলেছেন। তার বদলে জায়গা করে নিয়েছিল কাগজ ও প্লাস্টিকের কাপ। মৃৎশিল্পীরা আঁধারেই জীবন কাটাচ্ছিলেন। তবে প্রশাসন সব জায়গাতেই প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করায় নতুন করে দিশা দেখেছেন মৃৎশিল্পীরা। কাটোয়া শহরের কয়েকজন মৃৎশিল্পীর সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, আগে যে পরিমাণ মাটির চায়ের ভাঁড় তৈরি করা হতো মাঝে তা প্রায় বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। তবে আবার নতুন করে ভাঁড় তৈরি শুরু হয়েছে। নতুন প্রজন্ম শিল্পের ধাঁচ বদলে ফেলে মানুষের মনোপযোগী করে তুলছেন। আগে চাক ঘুরিয়ে মাটির ভাঁড় তৈরি করা হতো। এখন নতুন মেশিনের সাহায্যে মাটির চায়ের বড় ভাঁড়, গ্লাস, ঘট তৈরি করে ফেলছেন। তন্দুরি চায়ের জন্য মাটির ছোট ছোট ঘটের চাহিদা বেড়েছে। 

    পূর্বস্থলীর পারুলিয়ার যুবক সুজিত ঘোষ মাটির গ্লাস, ভাঁড় তৈরি করে নতুন আয়ের দিশা দেখছেন। রাহুল ঘোষের মতো নতুন প্রজন্মের যুবকরাও আগ্রহী হচ্ছেন। সুজিত বলেন, আমি আগে গাড়ি চালাতাম। আমার পরিবারের কেউ মাটির ভাঁড়, গ্লাস তৈরির পেশায় ছিলেন না। কিন্তু এখন যেভাবে আবার মাটির বড় গ্লাস, ভাঁড়ের চাহিদা বাড়ছে তাতে এটাকে আমরা পেশা হিসেবে তৈরি করেছি। আমাদের তৈরি মাটির গ্লাস, ভাঁড় কাটোয়া, কালনা, বর্ধমান, কৃষ্ণনগরে যাচ্ছে। ভিনরাজ্যেও সাপ্লাই দেওয়ার কথা চলছে। প্লাস্টিকের দাপাদাপি বন্ধ হওয়াতেই মাটির ভাঁড়ের কদর বেড়েছে। 

    আগে কাচের ছোট গ্লাসে চা দিতেন দোকানদাররা। এখন সেই আদলেই মাটির ছোট চায়ের গ্লাস, ভাঁড় তৈরি করা হচ্ছে। চায়ের দোকানদার নিতাই প্রামাণিক বলেন, এখন ক্রেতারা মাটির ভাঁড় চাইছেন। বিশেষ করে মাটির বড় গ্লাস, ভাঁড়ে চা খেতে চাইছেন। দাম বেশি দিয়েও তাঁরা মাটির জিনিসপত্রই পছন্দ করছেন। তাই আমরাও মাটির নানা গ্লাস, ভাঁড় সংগ্রহ করছি। তাতে খরিদ্দার সন্তুষ্ট হচ্ছেন। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)