• দলীয় প্রধানের দুর্নীতি, অফিস ঘেরাওয়ের ডাক পদ্ম সদস্যদের 
    বর্তমান | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: দুর্নীতি ইস্যুতে দলের প্রধানের বিরুদ্ধে বিজেপি সদস্যদের বিদ্রোহের সুর আরও চড়া হল। আগামী সোমবার নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের গোকুলনগর পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও করার ডাক দিয়েছেন বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যদের একটা বড় অংশ। প্রধানের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে দলের সদস্যরাই বিদ্রোহের পথে হাঁটতে তড়িঘড়ি হস্তক্ষেপ করল নেতৃত্ব। আগামী শনিবার সকাল ১০টায় গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির যুযুধান দুই শিবিরের নেতাদের নিয়ে মিটিং করবেন মেঘনাদ পাল। যদিও অভিযুক্ত প্রধান নিজস্ব তহবিলের হিসেব না দিলে সোমবার ঘেরাও অভিযান হবেই বলে নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় পদ্মপার্টির পঞ্চায়েত সদস্যরা।

    গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতে নিজস্ব তহবিলের (ওন ফান্ড) ১৪ লক্ষ টাকার কোনও হিসেব নেই। বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও এক কর্মী ওই টাকা নয়ছয় করেছেন বলে দলেরই একঝাঁক সদস্যের অভিযোগ। তাছাড়া, অনলাইন টেন্ডার এড়িয়ে অফলাইন টেন্ডার করে ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যে পঞ্চায়েত প্রধান ও এক কর্মীর বিরুদ্ধে জেলাশাসক এবং নন্দীগ্রাম-১ বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে।

    গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই কর্মী নিজস্ব তহবিলের টাকার হিসেব দেবেন বলে বিডিওকে কথা দিয়েও সেই হিসেব দেননি। মঙ্গলবার নন্দীগ্রাম-১ বিডিও সৌমেন বণিক এনিয়ে গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দীনবন্ধু মণ্ডলের সঙ্গে কথা বলেন। বিডিওর মুখে উপর প্রধান জানিয়ে দেন, নিজস্ব তহবিলের হিসেব তিনি দেবেন না। এরপরই বিক্ষুব্ধ বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যরা আগামী সোমবার পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও করার ডাক দেন। দুর্নীতি ইস্যুতে দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত তীব্র হতেই হস্তক্ষেপ করে বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন, গোকুলনগরের ঝামেলা মেটাতে শনিবার সকাল ১০টায় মিটিং হবে। সেখানে পার্টির মণ্ডল কমিটির সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মাইতি, পঞ্চায়েত প্রধান দীনবন্ধু মণ্ডল সহ নির্বাচিত সদস্যরা থাকবেন। ওইদিন নিজস্ব তহবিলের হিসেব না দিলে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার অফিস ঘেরাও হবে। দলের বিদ্রোহী পঞ্চায়েত সদস্যরা একথা জানিয়েছেন।

    নিজস্ব তহবিল ও অনলাইনের পরিবর্তে অফলাইনে টেন্ডার নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে গোকুলনগরে ঝামেলা চলছে। বিজেপির দুই গোষ্ঠীর কাজিয়ায় ক্রমশ বাড়তে থাকায় তড়িঘড়ি বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত নিল নেতৃত্ব। গত ২৯ আগস্ট ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সাধারণ সভার মিটিং ছিল। সেখানে বিজেপির ১৬জন সদস্যের মধ্যে মাত্র সাতজন উপস্থিত হন। দুর্নীতির অভিযোগে অধিকাংশ সদস্য ওই সভা বয়কট করেন। এরপর ৩০ তারিখ পঞ্চায়েত অফিসে তালা পড়ে। প্রধান নিজস্ব তহবিলের হিসেব না দেওয়ায় আগামী সোমবার অফিস ঘেরাও করার ডাক দেওয়া হয়েছে। দু’পক্ষের সংঘাত ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ায় দলীয় নেতৃত্ব শনিবার আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

    বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন, শনিবার সকাল ১০টায় গোকুলনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নেতৃত্বকে নিয়ে বসা হবে। নিজেদের মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। সেই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এই সভা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)